• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০৩:৩১:১৬ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১ রাত ০৩:৩১:১৬ (12-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

সারাবাংলা

১২৫ মণ গুড় আর ৮২ মণ চালের ক্ষীরে পালিত হলো চিশতীয়া পীরের নবান্ন মেলা

১৭ নভেম্বর ২০২৩ সকাল ০৯:০৬:৪৬

১২৫ মণ গুড় আর ৮২ মণ চালের ক্ষীরে পালিত হলো চিশতীয়া পীরের নবান্ন মেলা

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব নবান্নকে কেন্দ্র করে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বেগুনগ্রামে চিশতীয়া পীরের আস্তানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনের নবান্ন মেলা। প্রতি বছর বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এখানে নবান্ন উৎসব পালন করেন পীরভক্তরা। সকাল থেকে শুরু হয় এ মেলার কার্যক্রম।

নবান্ন উৎসবে প্রধান খাবার ক্ষীর। রান্নার প্রধান উপকরণ চাল, গুড়, দুধ আর নারিকেল। ভান্ডার খানার তথ্য মতে, এ বছর নতুন ধানের ৮২ মণ  চাল, ১২৫ মণ গুড়, ১ হাজার ৮০০ পিস নারিকেল এবং ৭০ মণ দুধ দিয়ে ক্ষীর রান্না হয়। কাজে সহযোগিতার জন্য পীরভক্তদের মধ্যে প্রায় ৫’শ জন কাজ করেছেন। আর স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ছিলেন ৩০০ জন।

জানা গেছে, পীর আব্দুল গফুর চিশতী কালাই উপজেলার বেগুনগ্রামে থাকতেন। সে সময় তিনি কুরআনের ওপর মানুষকে শিক্ষা দিতেন। পরবর্তীতে তিনি এখানে প্রতিষ্ঠা করেন মক্তব, চশমায়ে উলুম মাদ্রাসা এবং একটি আস্তানা। এরপর তিনি বাংলা ১৩৮২ সালের শ্রাবণ মাসের ১৬ তারিখে মৃত্যু বরণ করেন।

১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেগুনগ্রাম পীরের আস্তানায় ভক্তদের যেন ব্যস্ততার শেষ নেই। দূর-দূরান্ত থেকে তার হাজার হাজার ভক্ত হয়েছে। ভক্তদের আপ্যায়নের জন্য এক সঙ্গে ২৯টি চুলায় রান্না করা হচ্ছে ক্ষীর। রান্না চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। কেউ গুড় ভাঙছেন, কেউ নারিকেল ভাঙছেন আবার কেউ রান্না করছেন। রান্না হয়ে গেলে ক্ষীর রাখা হচ্ছে হাউজে। ক্ষীর বিতরণ করা হয় তরিকার হালকায় জিকিরের পর।

প্রতি বছর এ নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত ঘটে পীরের আস্তানায়। সাথে বেগুনগ্রামের ঘরে ঘরে জামাই-মেয়েসহ আত্মীয় স্বজনদের সমাগম ঘটে। উৎসবকে কেন্দ্র করে চলে নবান্ন মেলা। এই মেলাকে ঘিরে রাস্তার দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে বসে বিভিন্ন খাবার সামগ্রী ও মিষ্টান্নের দোকান। এছাড়া বসে বিভিন্ন সাংসারিক আসবাবপত্রের দোকানও। খৈচালা, চাঙারি, চালুন, কুলা, ডালা, কাঠের টুল, কাঠের পিরা, হাতপাখা, কাঠের হাতা, শিশুদের খেলনা, কাঠের ঘোড়া, করপা, ঢালিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রও বিক্রি হয় মেলায়। মৃৎশিল্পীরা বিক্রি করেন মাটির তৈরি বাহারি জিনিসপত্র।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এই অনুষ্ঠান অনেক পুরনো। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ৪৫-৫০ হাজার মানুষের জমায়েত ঘটে এখানে। গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে বেগুনগ্রাম পীরের আস্তানা।    

আস্তানার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, এই আস্তানা বাংলা ১৩৭২ সালের ৬ কার্তিক উদ্বোধন করা হয়। আস্তানাটি ৩৭ শতক জায়গার ওপরে অবস্থিত। পীরের সকল মুরিদান, আশেকান ও ভক্তদের অনুদানের অর্থেই আস্তানাটি পরিচালিত হয়ে আসছে।    

আস্তানার সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেন, পূর্বপুরুষের কাছ থেকে শুনেছি, হযরত খাজা শাহ মাওলানা মো. আব্দুল গফুর চিশতী বাংলা ১৩২৮ সালে বেগুনগ্রামে আসেন। তার আগমনের তিন বছর পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত এই নবান্ন উৎসব চলমান রয়েছে।

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন, নবান্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আইনশৃংখলা পরিস্থতি ঠিক রাখার জন্য আস্তানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ