সত্যি কী সকালের স্বাস্থ্যকর নাশতা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে?
লাইফস্টাইল ডেস্ক: সকালে কী খাচ্ছেন, কতটুকু খাচ্ছেন এই দুটি বিষয়ই আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনের মোট ক্যালরির ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সকালের নাশতা থেকে গ্রহণ করেন এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাবার খান, তাদের কোমরের মাপ, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ‘গুড’ কোলেস্টেরলের মাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়।স্বাস্থ্যকর সকালের নাশতার ভূমিকা: জার্নাল অব নিউট্রিশন, হেলথ অ্যান্ড এজিং-এ প্রকাশিত গবেষণাটিতে ৫৫ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ৩৮৩ জন ওভারওয়েট বা স্থূলতা-আক্রান্ত অংশগ্রহণকারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাদের মধ্যে তিনটি বা তার বেশি মেটাবলিক সিনড্রোমের উপসর্গ ছিল। তিন বছর ধরে এই অংশগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং তাদের নাশতার মান ও ক্যালরির পরিমাণ বিশ্লেষণ করে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়:যারা ব্রেকফাস্টে দৈনিক ক্যালরির ২০ শতাংশ এর কম গ্রহণ করেনযারা ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ক্যালরি গ্রহণ করেনযারা ৩০ শতাংশ এর বেশি ক্যালরি গ্রহণ করেনফলাফল: যারা দিনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ক্যালরি ব্রেকফাস্টে গ্রহণ করেন, তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে—বিএমআই কমেছে ২ থেকে ৩ শতাংশকোমরের পরিমাপ কমেছে ২ থেকে ৪ শতাংশট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমেছে ৯ থেকে ১৮ শতাংশএইচডিএল বা ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বেড়েছে ৪ থেকে ৮ শতাংশঅন্যদিকে, যারা গুণগত মানসম্পন্ন খাবার দিয়ে নাশতা করেছেন, তাদের—কোমরের পরিমাপ কমেছে ১.৫ শতাংশট্রাইগ্লিসারাইড কমেছে ৪ শতাংশএইচডিএল কোলেস্টেরল বেড়েছে ৩ শতাংশগবেষকদের মতে, এসব পরিবর্তন হৃদরোগ প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।সকালে যেসব খাওয়া উচিত: গবেষণায় বলা হয়, ভালো ব্রেকফাস্ট মানে এমন একটি খাবার যা উচ্চ মানের প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ফাইবার এবং পটাসিয়াম ও আয়রনের মতো মিনারেলে সমৃদ্ধ যেখানে অতিরিক্ত চিনি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকবে।উপযুক্ত সকালের নাশতার কিছু উদাহরণ:ওটমিল, বাদাম, বেরি দিয়েঅ্যাভোকাডো টোস্ট, ডিমের সাথে সবজিগ্রিক ইয়োগার্ট, ফল, গ্রানোলাডিম ও সবজি দিয়ে তৈরি স্ক্র্যাম্বলফলের সঙ্গে লো-ফ্যাট দইঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যে নাশতা করে ফেলাই উত্তম।কেন গুরুত্বপূর্ণ সকালের খাবার: সকালের নাশতা না খেলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয় বলছেন চিকিৎসকরা। তাই তারা সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার বিষয়ে জোড় দিয়েছেন। রাতে দীর্ঘসময় না খেয়ে সকালেও খাবার বাদ দিলে শরীরে নানা সমস্যা হয়। এমনকি অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। সকালের নাশতা যেসব ভূমিকা রাখে:রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করেসারাদিনের খাবারের ধরন নির্ধারণে সাহায্য করেহরমোনের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ কমায়মনোযোগ ও কর্মক্ষমতা বাড়ায়যারা সঠিক পরিমাণ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট করেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। তাই শুধু সকালের খাবার না খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করলেই হবে না, কী খাচ্ছেন ও কতটা খাচ্ছেন তা বুঝে নির্বাচন করাটাও সমান জরুরি।সূত্র: হেলথলাইন