• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ রাত ০৯:২১:৪৯ (20-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ রাত ০৯:২১:৪৯ (20-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

সৈয়দপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রেশম চাষ

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে কোন প্রকার পুঁজি লগ্নি ছাড়াই লাভবান হওয়ার কারণে হতদরিদ্র নারী-পুরুষের মাঝে রেশম গুটি চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দারিদ্র বিমোচনে ভুমিহীন, গৃহহীন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টির লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার হতদরিদ্র নারী-পুরুষের।সৈয়দপুর রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের ম্যানেজার রেজাউল করিম জানান, দারোয়ানীর একটি গ্রাম থেকে শুরু করে এখন এর বিস্তৃতি ঘটেছে নীলফামারীর ৬ উপজেলা এবং রংপুরের দুই উপজেলা তারাগগঞ্জ ও বদরগঞ্জে। নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৃষি শ্রমিক ও দিনমজুরের সংখ্যা বেশি। প্রান্তিক জনপদে এখনও রয়েছে প্রচুর বেকার নারী-পুরুষ। এদের অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকলেও নেই কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্থা। এসব মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৯৮৯ সালে মাত্র ৩ জন চাষী নিয়ে শুরু করেন রেশম গুটি চাষ। পোঁকা দিয়ে রেশম গুটি চাষ, প্রথম দিকে ঘিন্নায় আগ্রহ দেখাতো না মানুষ। কিন্ত বর্তমানে চিত্র ভিন্ন। কয়েক হাজার নারী-পুরুষ গুটি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।  প্রথম দিকে মানুষের অনাগ্রহে  প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মীরা নিরুৎসাহিত না হয়ে চেষ্ঠা অব্যাহত রাখেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী-পুরুষদের নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেন। পুরো প্রক্রিয়াটি তিনটি ধাপে-তুতগাছ লাগানো, পলু পালন ও গুটি তৈরির মাধ্যমে শেষ হয়। এই তিনটি প্রক্রিয়া পর্যন্ত সব ধরনের আর্থিক ও কারিগরী সহায়তা করেন রেশম সম্প্রসারণ প্রকল্প। বলা যায়, বিপণনসহ শ্রম ও সামান্য জমি ছাড়া প্রায় সব সহযোগীতা পান চাষীরা। ৬০০ কেজি গুটির জায়গায় এখন ২০ থেকে ২৫ হাজার কেজি গুটি উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া পোকার খাবারের জন্য মোট ১২০ বিঘা জমিতে ২ লাখ ৬০ হাজার তুত গাছ লাগানো হয়েছে।খাতামধুপুর ইউনিয়নের চাষী জসিম উদ্দিন জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছেন। এখান থেকে তিনি আয় করবেন ৮০ হাজার টাকা, যা অন্য কোনো ফসল চাষ করে পাওয়া যায় না। একই কথা বলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষী আনিছুর রহমান। তিনিও এক বিঘা জমিতে রেশম চাষ করেছেন।তারাগঞ্জ উপজেলার চাষী কৃষ্ণা রানী ও সুবল দাস জানান, প্রথমে রেশম চাষে তারা আগ্রহী ছিলেন না। পরে প্রশিক্ষণে এসে তাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন হয়। শুরু করেন চাষ। অভাবের সংসারে এখন স্বচ্ছলতা এসেছে বলে জানান তারা।রেশম চাষী আব্দুল জব্বার জানান, তিনিও এখন রেশম চাষ করে ভালভাবে সংসার চালাচ্ছেন। তিনি সকলকে রেশম চাষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।রেশম সম্প্রসারণ প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আশা করছি, এই প্রকল্পের পরিধি ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে। এর বিস্তৃতিতে এলাকায় দারিদ্র বিমোচনে সহায়ক হবে।খাতামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা পাইলট বাবু জানান, পরিত্যক্ত জমি, নদীর পাড়, পুকুরের পাড়, রাস্তার ধারে রেশম চাষ করা যায়। এটি অত্যন্ত লাভজনক চাষ। তার ইউনিয়নে এ চাষ হওয়ায় চাষীদের ধন্যবাদ জানান তিনি।কোন ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে করবেন বলে জানান চেয়ারম্যান মাসুদ।সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন বলেন, রেশম চাষ সৈয়দপুরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।