সুনীল মণ্ডল আজও পায়ে হেঁটে বিক্রি করেন নিজের হাতে বোনা মাদুর
তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মাদরা গ্রামের শতবর্ষী সুনীল মণ্ডলের বয়স এখন প্রায় এক শত দশ বছর; এই বয়সেও তিনি প্রতিদিন পায়ে হেঁটে সাত-আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তালা বাজারে মাদুর বিক্রি করতে যান।যেখানে বয়সের ভারে অনেকেই ঘরে বসে পড়েন, সেখানে সুনীল মণ্ডল এখনও হাতে মাদুর তুলে জীবিকার সন্ধান করেন।সুনীল মণ্ডল বলেন, প্রায় ৭০ বছর ধরে আমি মাদুর বিক্রি করি। একসময় আমাদের গ্রামের সবাই মাদুর বুনতো— পুরুষ, নারী সবাই মিলে। এখন আর কেউ করে না। আমার বড় ছেলে ব্যবসা করে, ছোট ছেলে মাছ চাষ করে। কিন্তু আমি এই পেশা ছাড়তে পারিনি। এটা আমার বাপ-দাদার পেশা, আমার জীবনের সঙ্গী।তিনি জানান, এক জোড়া মাঝারি মাদুর তৈরি করতে এখন খরচ হয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। অথচ, পাইকারি বিক্রি হয় ৮০০ টাকায়। লাভ থাকে সামান্যই। তবুও বিক্রি না করলে মন টেকে না, তাই আজও বাজারে যাই।স্থানীয়রা বলেন, প্রায় দুইশ বছর আগে থেকেই এ অঞ্চলে মেলের মাদুর তৈরির প্রথা ছিল। একসময় ২০০-৩০০ পরিবারের জীবিকার উৎস ছিল এই শিল্প। এখন কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া, সরকারি সহায়তা ও ভর্তুকির অভাবে প্রাচীন এই কুটিরশিল্প বিলুপ্তির পথে।তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, মেলে চাষ বা মাদুরশিল্পের জন্য কোনো প্রকার ভর্তুকি দেওয়া হয় না। তবে উদ্যোগ নিলে এই ঐতিহ্যটি সংরক্ষণ করা সম্ভব।