• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বিকাল ০৫:৫৭:৩০ (24-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

ভাপা পিঠায় ভাগ্য বদল হোসেন আলীর

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: শীতের আমেজ বাড়তে না বাড়তেই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মুখর হয়ে উঠেছে ভাপাপিঠার দোকানগুলো।উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে আছে এসব মৌসুমি পিঠার স্টল। আর সেই পিঠার বাজারে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন স্থানীয় যুবক হোসেন আলী।ভাপা পিঠার ধোঁয়া, চুলার উনুন আর ক্রেতাদের ভিড় সব মিলিয়ে তার দোকান যেন হয়ে উঠেছে শীতের এক অনন্য আকর্ষণ।প্রতিদিন বিকেল ৩টার পরই স্টল সাজাতে শুরু করেন শরিফুল। চালের গুঁড়া, গুড়, নারকেল আর পানি মিশিয়ে তৈরি হয় পিঠার খামির। এরপর চুলায় বসানো কলসির মুখে পাতার উপর দিয়ে একের পর এক ভাপা পিঠা তৈরি করেন তিনি। গরম গরম পিঠার গন্ধে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে শীতের ঐতিহ্যবাহী স্বাদ। সন্ধ্যা নেমে এলে তার দোকানে ভিড় আরও বেড়ে যায়।হোসেন আলী জানান, প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০টি ভাপা পিঠা বিক্রি হয় তার দোকানে। প্রতিটি পিঠার দাম ২০ টাকা। এতে প্রতিদিন তার বিক্রি দাঁড়ায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এই আয় দিয়েই তার পরিবারের চলার পথ।তিনি বলেন, বছরের অন্য সময় কাজ কম থাকে, কিন্তু শীত এলেই পিঠার চাহিদা বেড়ে যায়। এ সময় তিন মাস ভালো আয় হয়। এই আয়েই আমার পরিবার চলে। সন্তানদের পড়াশোনা, ঘরভাড়া সব কিছুই এই ভাপাপিঠা বিক্রির টাকায় করি।দীর্ঘদিন ধরে পিঠা বিক্রি করলেও এ বছর শীতের শুরুতেই ক্রেতাদের সাড়া আগের তুলনায় অনেক বেশি পেয়েছেন বলে জানান তিনি। শরিফুলের ভাপা পিঠার স্বাদ এবং পরিচ্ছন্নতার কারণে অনেকেই নিয়মিত তার দোকানে আসেন। স্থানীয়দের মতে, তার তৈরি পিঠা নরম, সুস্বাদু এবং গরম গরম পরিবেশন করা হয় বলে ক্রেতারা সন্তুষ্ট।ক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, শরিফুলের পিঠার স্বাদ একদম বাড়ির মতো। আমি প্রায় প্রতিদিনই তার দোকান থেকে পিঠা খাই। দামও হাতের নাগালে।পিঠা কিনতে আসা নুসরাত জাহান বলেন, শরিফুল ভাইয়ের পিঠা খুবই মজাদার। আমরা বন্ধুদের নিয়ে প্রায়ই এখানে খেতে আসি।ভাপাপিঠা শুধু শরিফুলের জীবিকারই অবলম্বন নয়; শীতের সন্ধ্যাগুলোকে রঙিন করে তোলে স্থানীয়দের জন্যও। রাস্তার পাশে গাছের নিচে বসানো এই পিঠার দোকানগুলোতে মানুষের আড্ডা, গল্প আর হাসির কলরব সব মিলিয়ে উল্লাপাড়ার শীতকে দিয়েছে এক অন্যরকম রূপ।স্থানীয়রা মনে করেন, যদি এমন উদ্যোক্তাদেরকে আরও সহযোগিতা করা যায়, তবে মৌসুমি এই ব্যবসা অনেকের জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। শীতের মৌসুমে হোসেন আলীর মতো অনেকেই পিঠা বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন, কেউ কেউ আবার এই ব্যবসাকে বছরের বাকি সময়েও চালিয়ে নিতে চান।শীত যতই বাড়ছে, উল্লাপাড়ার পিঠার দোকানগুলো ততই জমজমাট হয়ে উঠবে এমনটাই আশা পিঠা বিক্রেতাদের। আর সেই জমজমাট পিঠার বাজারের এক উজ্জ্বল মুখ হোসেন আলী যিনি পরিশ্রম আর সততার মাধ্যমে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন তার সংসারের আশা ভরসার চাকা।