• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৬:২১:৫৫ (08-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৬:২১:৫৫ (08-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

শতকোটি টাকা আত্মসাৎকারী বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান গ্রেফতার

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: গ্রাহকের শতকোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানকে গেফতার করা হয়েছে। কুষ্টিয়া কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস ফাউন্ডেশন নামের প্রতিষ্ঠানটিতে বিশ্বাস সঞ্চয় ঋণদান ও সমবায় সমিতি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার মালয়েশিয়া পালিয়ে যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গত পাঁচ মাস আত্নগোপনে থাকার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। আনিসের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের করা একাধিক মামলা রয়েছে আদালতে। ৩টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপনে থাকেন।স্বাস্থ্য বিভাগে ছোট পদে কর্মরত মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে আনিসুর রহমান বিশ্বাস (আনিচ) ২০০৬ সালে বিশ্বাস সঞ্চয় ঋণদান ও সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি এনজিও চালু করেন। এরপর বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা দেবার আশ্বাসে সমিতির সদস্য সংগ্রহ শুরু করেন। সেখান থেকেই তার প্রতারণার ফাঁদ বিস্তার লাভ করতে থাকে।এলাকার শত শত মানুষ লাখে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা মাসিক লভ্যাংশের আশায় লাখ লাখ টাকা লগ্নি করতে থাকেন বিশ্বাস ফাউন্ডেশনে। এভাবেই বাংলাদেশের ৯টি জেলায় বিভিন্ন নামে ৫৮টি এনজিওর শাখা তৈরি করা হয়। ৫৮টি শাখায় প্রায় ১৫৩ জন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয় এবং কর্মচারীদের কাছ থেকে একাধিক ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প নেয়া হয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার কথা বলে।এসব কর্মীদের দিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা বিশ্বাস ফাউন্ডেশনে লগ্নি করানো হয়। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বিশ্বাস ও তার ভাই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবু সাঈদ বিশ্বাস দু'জনের ২টি প্রাইভেট কার ছাড়াও অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য আরও তিনটি প্রাইভেট কার কেনা হয়।কুষ্টিয়ার কুমারখালীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় মোট ৬টি টিভি ফ্রিজ ও নিত্য ব্যবহার্য শোরুম চালু করা হয় এবং এসব শোরুমে মালামাল পরিবহনের জন্য দুটি কাভার্ড ভ্যান কেনা হয়।গ্রামে বিলাস বহুল বাড়ি ছাড়াও কুষ্টিয়া পিটিআই রোডে ৭ তলা ভবন রয়েছে। আরো ৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। কুমারখালী কাজীপাড়া মেইন রোডের সাথে ১৯ শতাংশ মূল্যবান জমি ক্রয় ও ঢাকা বিভিন্ন এলাকায় ৩/৪ টি ফ্ল্যাট কিনে বিলাসী জীবন যাপন করতে থাকেন আনিসুর রহমান ও তার ভাই। এমন অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীরা।২০২২ সালে সারা দেশে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্য মালঞ্চ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ নামের এমআরএ সনদ ৪৫ লাখ টাকায় ক্রয় করেন প্রতিষ্ঠানটি।২০২৩ সালের শুরুতেই নামে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের লস। সদস্যরা বিষয়টি অনুমান করতে পেরে তাদের লগ্নীকৃত টাকা ফেরত চাইলে শুরু হয় নানা টাল বাহানা। একাধিকবার সময় দিয়েও টাকা ফেরত না দিলে সদস্যদের চাপে আলাউদ্দিন নগরের বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের মূল অফিসে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় আনিসসহ বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।এরপর থেকেই দেশত্যাগের চেষ্টা করতে থাকে আনিস। ওই সময় স্থানীয়রা পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে পরবর্তীতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে নতুন পাসপোর্ট এর আবেদন করেন। এছাড়াও পূর্বের পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে বলে সাধারণ ডায়েরি করে নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করে যেকোনো ভাবে আনিস বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের কাছে প্রতারিত হামিদুল হক মঞ্জু বলেন, সম্পর্কের খাতিরে প্রলোভন দেখিয়ে আমার বিশ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে এই প্রচারক আনিস, আমি ওর বিচার চাই।কুমারখালী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভ্যান্ডার মিলন বলেন, আমার জমি বিক্রি করা ১৯ লাখ টাকা নিয়েছে আনিস। আমার টাকা ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের গ্রাহক লিয়াকত আলী বিশ্বাস বলেন, আমার এবং আমার পরিবারের প্রায় এক কোটি টাকা নিয়েছে এই আনিস। আমি দ্রুত এর বিচার চাই।কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আকিবুল ইসলাম জানান, বিমানবন্দর থেকে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানকে আটকের পর কুমারখালী থানা পুলিশ তাকে কুমারখালী নিয়ে আসা হয়েছে। যেহেতু তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে তাই তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হচ্ছে। আরও অনেক ভুক্তভোগী থানায় আসছে তাদের অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।