নোবিপ্রবিতে সমন্বয়কের জন্য বিশেষ পরীক্ষার আয়োজন
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফলিত গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলামকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিশেষভাবে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়।অনুসন্ধানে জানা যায়, জাহিদুল ইসলাম হাসান সর্বশেষ স্নাতক ৪র্থ বর্ষের ১ম সেমিস্টারে অংশগ্রহণ করেন। যেখানে তিনি ৭ টি বিষয়ের মধ্যে ২টি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। বাকি ৫টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে অপারগ হন। নিয়ম অনুযায়ী এতগুলো বিষয়ে পরীক্ষা দিতে অপারগ হলে বা ফেইল করলে পরবর্তী ব্যাচের সাথে পরীক্ষা দিতে হয়। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়কের জন্য উপাচার্যের বিশেষ অনুমোদনে ৪র্থ বর্ষের ১ম সেমিস্টারে বাকি ৫টি বিষয়ে একটি স্পেশাল পরীক্ষা দেওয়ার নোটিশ প্রকাশ করে নোবিপ্রবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর। প্রশ্নপত্র মডারেশন ফি বাবদ ডিপার্টমেন্ট কোনো টাকা নিবে না বলে এই মর্মে এবং আনুষঙ্গিক আরো খরচ কমানোর জন্য অনুরোধ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরকে একটি অনুরোধেপত্র দেয় নোবিপ্রবি ফলিত গণিত বিভাগ।নোবিপ্রবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্যমতে, উক্ত শিক্ষার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে নোবিপ্রবি প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে ১২ মার্চ একটি নোটিশ প্রদান করা হয়। যেখানে দেখা যায় জাহিদুল ইসলামকে মোট ৫ টি বিষয়ে একটি বিশেষ পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়। বিষয়গুলো হলোA. MTH- 4101, A. MTH- 4103, A. MTH- 4105, A. MTH- 4107, A. MTH- 4109। যেখানে পরীক্ষার ব্যয়বাবদ ৪২,৭১০ টাকা অগ্রণী ব্যাংকের নোবিপ্রবির হিসেবে জমার দেওয়ার নির্দেশ দেয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর। পরবর্তীতে মডারেশন ফি মওকুফ করে আবারও নোটিশ দেয়া হয়। এদিকে স্নাতক শেষ হলে অসমাপ্ত সর্বোচ্চ ৩টি বিষয়ে বা ১৫ ক্রেডিটের পরীক্ষা দেওয়ার বিধান থাকলেও বিশেষ অনুমতি নিয়ে স্নাতকের মাঝে এমন পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আইনে। এ বিষয়ে পরীক্ষা উপ নিয়ন্ত্রক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা অধ্যাদেশে বিশেষ অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার আইন নেই। তবে পরীক্ষার খরচ বহন করে কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে আমরা পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করি।বিশেষ অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার আবেদনকারী সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিনি। কারণ এই রকম আরো অনেকেই পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে আমি প্রথমে আবেদন করলেও পরবর্তীতে পরীক্ষা দেয়া থেকে সরে আসি। কেননা বিশেষ সুবিধা নিয়ে আগে ছাত্রলীগ বা অন্যান্যরা নিয়েছিল বা এখনো নিচ্ছে। আমি সেই সুবিধা নিয়ে চাই না। এই বিষয়ে আমার ডিপার্টমেন্টের কোনো শিক্ষকের দোষ নেই।এ বিষয়ে ফলিত গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন বলেন, জাহিদুল ইসলাম অসুস্থতার জন্য পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরবর্তীতে আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা তার জন্য বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু আবেদনের নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ায় এখন আর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাকে আবার পরবর্তী ব্যাচের সাথে পুনরায় ভর্তি হয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।প্রশ্নপত্র মডারেশন ফি ও বিশেষ সুবিধা প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার আর্থিক সমস্যা থাকার কারণে আমাদের কাছে এসে বলায় আমরা তার প্রশ্ন মডারেশনের ফি না নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এছাড়াও অন্য কোন শিক্ষার্থী যদি এই রকম সমস্যার সম্মুখীন হয় তাহলে আমরা তার জন্য বিশেষ কিছু করার সুযোগ থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।নোবিপ্রবি উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, জাহিদের বিষয়ে এখনো আমার কাছে কোন খবর আসেনি। আমি অতি দ্রুত এই বিষয়ে খতিয়ে দেখব।