কুমিল্লায় প্রসূতির অস্ত্রোপচার করলেন নার্স : নবজাতকের মৃত্যু, মায়ের অবস্থাও সংকটাপন্ন
কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায় অবস্থিত ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভুল অপারেশনে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে হাসপাতালের নার্সরা অস্ত্রোপচার করলে নবজাতক মারা যায়। পরে প্রসূতির অবস্থাও সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর হাসপাতালের চেয়ারম্যান, চিকিৎসক ও নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবাই হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান।১৪ জুন শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত নবজাতকের মা শারমিন আক্তার (২২) নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকার আতিকুর রহমানের মেয়ে। পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার সকালে প্রসব ব্যথা শুরু হলে শারমিনকে ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নার্সরা জানান, মা ও শিশু সুস্থ আছে এবং স্বাভাবিকভাবে প্রসব করানোর চেষ্টা চলছে।কিন্তু চিকিৎসক উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও নার্সরাই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন, ফলে নবজাতক মারা যায়। শারমিনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। পরে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করা হয়।শারমিনের মা রোজিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘সে আগেও সিজার করিয়েছে। তা জেনেও কেন স্বাভাবিক প্রসব করানোর চেষ্টা করা হলো? আমার নাতিকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি বিচার চাই।’শারমিনের খালার প্রশ্ন, ‘ডাক্তার ছাড়া কীভাবে অপারেশন করা হয়? এখন আমার ভাগ্নির জীবনও ঝুঁকির মুখে।’স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নয়তলা একটি আবাসিক ভবনের নিচতলার দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে অনুমোদনহীনভাবে হাসপাতালটি পরিচালনা করা হয়। হাসপাতালের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনও।ঘটনার পর হাসপাতাল ঘিরে উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়। কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির আহমেদ বলেন, ‘নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পেরেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালটির লাইসেন্স আছে কিনা, তাও যাচাই করা হবে।’কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম জানান, ‘সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টিম হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’