• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বিকাল ০৫:১৯:২৩ (15-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বিকাল ০৫:১৯:২৩ (15-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

শুকিয়ে যাওয়া নদীর বুকে ফলানো ধানে জীবন চলে শতাধিক কৃষকের

নওগাঁ প্রতিনিধি: চারদিকে শুধু ধান আর ধান। দেখে মনে হবে হাজার বিঘার মাঠ। সেখানে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল ধান। আর সেই ধান কাটছে বেশ কয়েকজন কৃষক। কেউ কেউ আবার গরু চড়াচ্ছেন মাঠে।বলছি নওগাঁর একসমেয়র খরস্রোতা ছোট যমুনা নদীর কথা। স্রোত তো দূরের কথা, এক ফোটা পানিও নেই সেখানে। তলদেশ শুকিয়ে পরিণত হয়েছে বিস্তির্ণ মাঠে। নদীর বুক শুকিয়ে সৃষ্ট সেই মাঠজুড়ে এখন দোলছে কৃষকের স্বপ্ন সোনালি ধান। বদলগাছী উপজেলার তেজাপাড়া-কাদিবাড়ি পাশাপাশি দুটি এলাকায় ধান চাষ করেছেন শতাধিক কৃষক।সেখানে গিয়ে কথা হয় তসলিম, আফজাল, রফিকুল, শামিম ও মোস্তফার সাথে। তারা জানালেন, ‘আমরা ৫-৭ জন মিলে বেশ কিছু জায়গায় ধান চাষ করেছি। নিজেরাই এখন সেই ধান কাটছি। এই ধান দিয়ে আমাদের সারা বছরের সংসার চলে। অবশ্য বৃষ্টির কারণে পানি জমতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পর পানিতে ভরে যাবে নদীটি।’তারা আরও জানালেন, ‘উত্তর দিকের তেজাপাড়া ব্রিজ থেকে দক্ষিণে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার লোকজন এই নদীর বুকে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় আমরা ধান চাষ করতে পারি, যা দিয়ে আমাদের সংসার চলে।’নদীর বুকে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে এসেছেন এক যুবক। তিনি জানালেন, ‘নদি শুকিয়ে মাঠ হয়ে গেছে। তাই এখানে গরু চড়াতে পারছি।’তবে যেখানে যার থাকার কথা সেটা থাকলেই মানানসই হয়। নদীতে থাকবে পানি, আর মাঠে হবে ধান। এমন দৃশ্যই ভালো লাগবে সকলের। একসময়ের খরস্রোতা ছোট যমুনা নদী শুকিয়ে এখন মাঠ হয়ে গেছে, আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ করছেন ধান চাষ, কেউবা গরুকে খাওয়াচ্ছেন ঘাস। যে যার মতো সুবিধা খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক।নওগাঁর নদী, খাল-বিল দখল ও দূষণের প্রতিবাদে বিভিন্ন সময় রাস্তায় নামা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের সভাপতি এ্যাড. ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘বিভিন্ন নদী, খাল-বিল, প্রাকৃতিক বনায়নে ভরপুর আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। কিন্তু আমাদের বিরূপ আচরণের কারণে আমরা নিজেরাই প্রকৃতিকে বিভিন্নভাবে ধ্বংস করে ফেলছি। নওগাঁসহ সারা দেশের নদী, খাল-বিল দখল ও দূষণের জন্য সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি জনসচেতনতার অভাবও এর জন্য দায়ী। তবে নদী শুকিয়ে গেলে সেখানে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করাটা খারাপ কিছু না। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়ে চাষ করলে ভালো হয়। এতে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।’জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, ‘বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৭শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এছাড়া নদীর ধারে উল্লেখযোগ্য হারে ধান উৎপাদিত হয়েছে। কারণ, নদীর পাশের জমিতে পলির স্তর জমে এবং সেখানে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই সেখানে ধান, সবজিসহ সব ধরনের ফসল ভালো উৎপাদিত হয়ে থাকে।’নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান বলেন, ‘ছোট যমুনা নদীসহ কয়েকটি নদী ও খাল পুনঃখননের জন্য আবেদন দেওয়া আছে। অনুমোদন পেলে যেকোনো সময় কাজ শুরু হবে।’এদিকে নওগাঁ-৩ আসনের সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী সৌরেনের চেষ্টায় বদলগাছী উপজেলায় ছোট যমুনা নদীর ৩৩ কিলোমিটার অংশের পুনঃখনন কাজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেটা যেকোনো সময় বাস্তবায়ন হওয়ার পথে।