ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে: ড. হেলাল উদ্দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে”। তিনি বলেন, যাদের হাতে নারী ও শিশু নির্যাতিত হয়েছে তারাই নারীর স্বাধীনতার নামে সমাজে বেহায়পনা সৃষ্টি করেছে। যারা নারীর স্বাধীনতার কথা বলে তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন কি করেছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তাদের শাসনামলে নারী ও শিশু ধর্ষিত হয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারী ও শিশু নির্যাতন চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে এবং নারীদের স্বাধীনতা, অধিকার ও মর্যাদা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত হবে।জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার নিশ্চিয়তা দিয়ে তিনি বলেন, ইসলাম ব্যতীত কোনো ধর্ম, কোনো বিধান নারীদের সম্মানিত এবং মর্যাদাবান করেনি, করতে পারবে না। আল্লাহর আইনে নারী-পুরুষ কিংবা ধর্ম বর্ণের কোনো বৈষম্য নেই। আল্লাহর আইনে মানুষ হিসেবে সকলেই সমান। তাই ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর বৈষম্য দূর করতে হবে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ব্যতীত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়।২৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী মতিঝিল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে আয়োজিত মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হেলাল উদ্দিন এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, আল্লাহর জমিনে আইন চলবে আল্লাহর। মানব রচিত আইনে শান্তি প্রতিষ্ঠিতি হয়নি, হবেও না। তিনি উপস্থিত নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য তিনি আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিলে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, বৈষম্যহীন এক কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।জুলাই বিপ্লব ছিল নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের চেতনা উল্লেখ করে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন যারা জুলাই শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করবে জাতি তাদেরকে কখনো ক্ষমা করবে না। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে যারা ‘না’ ভোট দেওয়ার প্রচারণা চালাচ্ছে তারা দেশ ও জাতির দুশমন। এরাই মূলত আওয়ামী লীগের গুপ্ত দোসর। জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে বিদ্রুপ, খুনি হাসিনার বিচারের রায় নিয়ে আদালত অবমাননাসহ একের-পর এক বক্তব্য দেওয়া বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে বিএনপি সাংগঠিক কোনো পদক্ষেপ না নিলে জাতির বুঝতে বাকি থাকবে না ফজলুর রহমানের এসব বক্তব্য বিএনপির দলীয় বক্তব্য। যেই আওয়ামী লীগ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রেখে শারীরিকভাবে অচল করে দিয়েছে! অসুস্থ নেত্রীকে যারা চিকিৎসা করার সুযোগও দেয়নি সেই আওয়ামী লীগের অককর্মের মামলা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি না দিয়ে অপরাধীদের বিচারে সহযোগিতা করতে তিনি বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিনি বিএনপিসহ দেশের সকল গণতন্ত্রকামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক) মুহাম্মদ শামছুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এর-আগে পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর (মহিলা বিভাগ) উদ্যোগে এক নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী) এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।প্রধান অতিথি ড. হেলাল উদ্দিন উপস্থিত নারী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, দ্বীন কায়েমের আন্দোলন নারী পুরুষ সকলের জন্য ফরজ। এই ফরজ বিধান পালনে মাল ও জান কুরবানি করা আল্লাহর আদেশ। আগামী নির্বাচনকে দ্বীন কায়েমের চূড়ান্ত কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে যা যা করণীয় তার সবটুকু করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন বিনির্মাণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে নারী সমাজ। তাই নারী সমাজকেই দূর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দূর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ আর সন্ত্রাসদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে।