চৌহালীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ
চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার স্থল ইউনিয়নের ডিলার মো. হাসান আলীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ স্থানীয়দের।জানা গেছে, ডিলার হাসান আলী প্রতি মাসে ৫৮৭ বস্তা চাল বরাদ্দ পান। একজন কার্ডধারীকে প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি চাল বিতরণ না করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস ও ট্যাগ অফিসারের যোগসাজশে তা কালোবাজারে বিক্রি করছেন।অভিযোগকারীরা জানান, অনেক কার্ডধারী জানেন না তাদের নামে কার্ড আছে। এমনকি মৃত ব্যক্তিদের নামেও চাল উত্তোলন হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। স্থল ইউনিয়নের সন্তোষা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, দিঘলবাড়ি গ্রামের আলেক চান, ফলসাটিয়া গ্রামের আব্দুল্লাহ, নওহাটা গ্রামের কোরবান আলী ও হাসিনা খাতুন বলেন, গত এক বছরে তারা একবারও চাল পাননি।নওহাটার গোলজার শেখের পুত্রবধূ রুমা খাতুন বলেন, আমার শ্বশুর কয়েক মাস আগে মারা গেছেন। কে চাল উত্তোলন করছে আমরা জানি না। কার্ডও আমাদের কাছে নেই।কোচগ্রামের নাছিরুল ইসলাম, নয়াপড়া গ্রামের আ. রাজ্জাক ভূইয়ার নাম বিতরণ তালিকায় থাকলেও তারা কেউ জানেন না তাদের নামে কার্ড আছে৷নয়াপাড়া গ্রামের মোছা. শাফি খাতুন বলেন, নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে তিন বছর আগে নারায়ণগঞ্জ চলে এসেছি৷ আমার নামে কার্ড কীভাবে হয়ছে তা আমার জানা নেই।এ বিষয়ে ডিলার মো. হাসান আলী বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী যাদের কার্ড আছে তাদের চাল দিয়েছি। কেউ হয়তো মিথ্যা অভিযোগ করেছে।ট্যাগ অফিসার ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু হুরায়রা বলেন, আমি প্রায় পাঁচ মাস আগে ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি। আমি যখন দায়িত্বে ছিলাম তখন মোটামুটি সবাই চাল পেতো কেউ অভিযোগ করে নাই৷বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার মামুন সিরাজ জানান, ১১ আগস্ট ট্যাগ অফিসার হিসেবে আমাকে নিযুক্ত করা হয়। আমি ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত নিজে উপস্থিত থেকে ২৯০ বস্তা চাল বিতরণ করেছি। দ্বিতীয় চালানে অবশিষ্ট চাল উত্তোলনের পর বিতরণের কথা থাকলেও আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। পরবর্তীতে ডিলার মাস্টাররোলে স্বাক্ষর চাইলে আমি আপত্তি জানাই এবং বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করি।উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অ.দা.) আনোয়ার হোসেন বলেন, চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়ছে কিনা খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ইউএনও স্যার।চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেনি। ফলে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি৷