১৬ মাসে পবিত্র কোরআন মুখস্থ, হাফেজ শিহাবকে রাজকীয় বিদায়
পঞ্চগড় প্রতিনিধি: মাত্র ১৬ মাসে পবিত্র কোরআনুল কারিম মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছে পঞ্চগড়ের শাহরিয়া প্রধান শিহাব (১১)। তার এই অসাধারণ অর্জনকে কেন্দ্র করে ৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাহেববাজার এলাকার হলি কোরআন নুরানী কিন্ডারগার্টেন মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয় এক আবেগঘন ও বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। মাদরাসার পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া হয় রাজকীয় বিদায়, যা এলাকাজুড়ে আনন্দ-উল্লাসের সৃষ্টি করেছে।শিহাব পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের নালাগছ গ্রামের মনিরুজ্জামান প্রধানের ছেলে।মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুন মাসে শিহাব ওই মাদরাসায় ভর্তি হয়। নিয়মিত পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও শিক্ষকদের যত্নে মাত্র ১৬ মাসের মধ্যেই সে পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্থ করতে সক্ষম হয়। তার এই অসাধারণ সাফল্যে শিক্ষক, সহপাঠী ও অভিভাবক সবাই মুগ্ধ ও গর্বিত।শিহাবের এই কৃতিত্বকে স্মরণীয় করে রাখতে মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিলের। অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয় তাকে। শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার’, ‘আহলান সাহলান মারহাবা মারহাবা’ স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে মাদরাসার প্রাঙ্গণ।পরে এক সুসজ্জিত মাইক্রোবাসে তাকে বসিয়ে মোটরসাইকেল বহরসহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ সময় মাদরাসা থেকে মাইক্রোবাসে উঠার মুহূর্ত পর্যন্ত দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা তাকে বিদায় জানায়। অনুষ্ঠানে শিহাবের বাবা মনিরুজ্জামান প্রধানকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে শিহাব বলে, আমাদের মাদরাসার শিক্ষকরা অনেক যত্নসহকারে পড়ান। তাদের আন্তরিকতার কারণেই আমি এত অল্প সময়ে কোরআনের হাফেজ হতে পেরেছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন, আমি বড় হয়ে একজন আলেম হতে চাই।তার বাবা মনিরুজ্জামান প্রধান বলেন, এই মাদরাসার পরিবেশ খুবই ভালো। অল্প সময়ের মধ্যে আমার ছেলে ৩০ পারা কোরআনের হাফেজ হয়েছে, এটা আমাদের পরিবারের জন্য গর্বের। আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এবং সবার কাছে দোয়া চাইছি যেন সে বড় হয়ে একজন খাঁটি আলেম হতে পারে।মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. আব্দুর রহমান বলেন, ২০২১ সালে হলি কোরআন নুরানী কিন্ডারগার্টেন মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিহাব শুরু থেকেই মেধাবী ও মনোযোগী ছিল। কঠোর পরিশ্রমের ফলেই সে মাত্র ১৬ মাসে কোরআনের হাফেজ হতে পেরেছে। বর্তমানে আমাদের মাদরাসায় নুরানী বিভাগে ২২০ জন এবং হেফজ বিভাগে ২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।