সাজেকে হামলা চালিয়ে ফরেস্ট অফিস ভাংচুর-লুটপাট করেছে ইউপিডিএফ, বনরক্ষীকে মারধর
রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে বনবিভাগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে ইউপিডিএফ। এ ঘটনায় আশরাফুল আলম নামে এক বনরক্ষী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হামলার সময় কার্যালয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট ও একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর রোববার দুপুরে সাজেকের মাচালং দক্ষিণ একুইজ্জাছড়ি এলাকায় বনবিভাগের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে ইউপিডিএফ নেতা সচিব চাকমার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধভাবে লাঠিসোঁঠা নিয়ে বনবিভাগের কর্মীদের উপর আক্রমণ করে ইউপিডিএফ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নারী কর্মীরা।পরে তারা মাচালং বাজারে বনবিভাগের কার্যালয়ে আক্রমণ করে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় লুৎফর রহমান নামে এক বনরক্ষীকে অপহরণ করার চেষ্টা চালায়। সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছে ইউপিডিএফের হাত থেকে বনরক্ষী লুৎফর রহমানকে উদ্ধার করে।ইউপিডিএফ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নারী সন্ত্রাসীরা পরে গাছ কেটে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে সাজেক সড়কে যানচলাচল চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। এতে সাজেকে বেড়াতে আসা শত শত পর্যটক ও সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমার মেয়ের বিয়েতে আসা অতিথিরা আটকে পড়েন। সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী সড়কের গাছ সরাতে গেলে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নারী কর্মীরা সেনাবাহিনীর সাথে চরমভাবে উসকানিমূলক আচরণ করতে থাকে।সেনাবাহিনী ইউপিডিএফের পাঁতা ফাঁদে পা না দিয়ে কৌশলে সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করে। এই ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে শতাধিক লোককে আসামি করে মামলার প্রস্তুতি চলছে। সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক এখানে বহিরাগত লোকজন এসে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, মামলা হলে প্রশাসন আইনগত পদক্ষেপ নেবে।এদিকে সাজেক বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বনের জমিতে ইউপিডিএফ স্কুলের নামে জমি দখল করে স্থাপনা তৈরি করছে। এর আগে বহুবার নিষেধ করা হয়েছে, বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়েছে। তারপরও ইউপিডিএফ বনের জমিতে স্থাপনা তৈরি করছে। আজ বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়, কার্যালয় ভাংচুর করে।সূত্র অনুযায়ী, উক্ত স্থানে সর্বপ্রথম ২০১২ সালে একটি ব্র্যাক স্কুল স্থাপন করা হয়েছিল। তবে অনুদানের অভাবে ২০১৯ সালে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়।চলতি বছরের শুরুতে পুনরায় সেখানে স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলে বন বিভাগ ওই স্থানে নির্মাণকাজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে আদালত উক্ত স্থানে স্কুল নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।অভিযোগ রয়েছে, আদালতের সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ১৩ ডিসেম্বর রোববার আবারও স্কুল ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হলে বনরক্ষীরা বাধা প্রদান করেন।