বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস
মোস্তফা কামাল পলাশ: বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিলাম ১১ মে (প্রথম পূর্বাভাস) ও ১৪ মে (২য় পূর্বাভাস)। ২য় পূর্বাভাসে উল্লেখ করেছিলাম যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি মে মাসের ২৬ তারিখ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে সৃষ্টির আশংকা রয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে শক্তি (শ্রীলংকার দেওয়া নাম)। ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশা উপকূল ও মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোন স্থানের উপর দিয়ে স্থল-ভাগে আঘাত করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে ২৭ থেকে ২৯ মে এর মধ্যে। আশা করা যাচ্ছে, এটি কিছুটা দুর্বল প্রকৃতির ঘূর্ণিঝড় হবে।আজ ১৯ মে সোমবার (বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা) ৩য় পূর্বাভাসের মাধ্যমে পূর্বের দুইটি পূর্বাভাসের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করছি। অর্থাৎ, বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে মে মাসের ২৭ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশা উপকূল ও মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোন স্থানের উপর দিয়ে স্থল-ভাগে আঘাত করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।এখানে উল্লেখ করতে চাই যে একই সপ্তাহে আরব সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। সম্ভাবনা রয়েছে যে আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়টি প্রথমে ও পরে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হবে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক অফিস কর্তৃক প্রস্তুত করা ঘূর্ণিঝড়ের নামের লিস্টের পরবর্তী দুইটি নামে ক্রম হলও শক্তি (Shakhti) ও মন্থা (Mon-Tha)। ফলে, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের মধ্যে যে সাগরে ২০২৫ সালের ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হবে তার নাম হবে শক্তি (Shakhti) ও ২য় ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে মন্থা (Mon-Tha)। শক্তি (Shakhti) নামটি শ্রীলংকার দেওয়া এবং মন্থা (Mon-Tha) নামটি থাইল্যান্ডের দেওয়া।ফলে, আজ থেকে আমার তথ্য সূত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশের কোন গণমাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে কোন সংবাদ প্রকাশ করলে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম শক্তি (Shakhti) না দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। কারণ, যদি বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টি আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়টির পরে সৃষ্টি হয় সেই ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে মন্থা (Mon-Tha)। যদি আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি না হয় তবে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে শক্তি (Shakhti)। বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে সেই ঘূর্ণিঝড়টি কোন স্থানের উপকূলে আঘাত করবে ও শক্তি কেমন হবে তার নির্ভর করছে আরব সাগরে যে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে তার উপর। বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে সেই ঘূর্ণিঝড়টির ১ থেকে ২ দিন পূর্বেই যদি আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়টি শেষ হয়ে যায় তবে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা বেশি শক্তিশালী হওয়ার আশংকা রয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়টি ২৯ মে থেকে ৩০ মে এর মধ্যে উপকূলে আঘাত করার আশংকা বেশি।বিশেষ দ্রষ্টব্য: এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে ঘূর্ণিঝড়টি ঠিক কোন স্থানের উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। একইভাবে এখনই বলা যাচ্ছে না যে সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি কেমন হবে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ২১/২২ মে এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। লেখক: আবহাওয়া ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা, কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক।