নিজস্ব প্রতিবেদক : ঐক্য, সংগ্রাম, মর্যাদা ও মুক্তির পতাকা হাতে শ্রমিকের রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অঙ্গসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’। সংগঠনটির আহ্বায়ক হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির, সদস্য সচিব রিয়াজ মোরশেদ এবং মুখ্য সংগঠক আরমান হোসেন।
১৭ অক্টোবর শুক্রবার সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে ইস্কাটন নেভি কলোনিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’ আত্মপ্রকাশ করে।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আজ কিছু রাজনৈতিক দল জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে।
নাহিদ বলেন, ‘যে দিনে কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে, সেই দিনে জাতীয় শ্রমিক শক্তি রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। আমরা জানি রাজপথের শক্তি জয়ী হয়। ইনশাআল্লাহ জাতীয় শ্রমিক শক্তিও জয়ী হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি শ্রমিকদের পক্ষে রাজনীতি করবে।’
রাজনৈতিক দলের ঐক্য জাতীয় ঐক্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য তখন হয়, যখন সমাজের সব অংশের মানুষ দেশপ্রেমের ভিত্তিতে এক হয়ে লড়াই করে। যেটা আমরা দেখেছিলাম জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। সেসময় কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানার দেখিনি। শুধু দেখেছিলাম ছাত্র-শ্রমিক এবং নানান পেশাজীবী। আমরা সেই জাতীয় ঐক্যের দিকে এগোচ্ছি, যেখানে ছাত্র শ্রমিক কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করবে লড়াই করবে।,’
‘বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার যে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থান ছিল, সেখানে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন শ্রমিকরা। ন্যায্য মজুরির জন্য চব্বিশের শুরুর দিকেও আন্দোলনে নামতে হয়েছিল তাদের, পুলিশের গুলিতে শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। সে সময় শ্রমিকের অধিকার ছিল না।’
সংস্কার কমিশন নিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অনেকগুলো কমিশন গঠিত হয়েছে। কিন্তু শ্রম কমিশন নিয়ে কোনো আলোচনা দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য কমিশন নিয়েও কোনো আলাপ নেই। মানুষের জীবনের সঙ্গে যে গণসেবামূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জড়িত তার সংস্কার নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। শুধু নির্বাচন কেন্দ্রিক ছয়টি সংস্কার কমিশন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠন হয়েছে। সেখানেও গণতন্ত্রের জন্য ভালোকিছু দেখতে পারছি না।’
গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লড়াইয়ের পাশাপাশি অর্থনৈতিক রূপান্তরেও ছাত্র শ্রমিক এবং সব পেশাজীবী মানুষ এক হয়ে লড়াইও করবে বলে প্রতিজ্ঞা করেন নাহিদ ইসলাম।
যেই মাফিয়ারা শ্রমিকদের শোষণ করে গেছে, লুটপাট করে গেছে, তাদেরকে এখনও বিচারের আওতায় আনা হয়নি, তাদের এখনও প্রটেকশন দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এনসিপির আহ্বায়ক।
অনুষ্ঠানে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘জাতীয় শ্রমিকশক্তি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের প্রতি অসম্মানের আচরণ করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবেও এই বৈষম্য চালানো হচ্ছে।’
শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত কয়েক বছরে হাজারো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। তাদের হত্যার জন্য দায়ীদের তেমন বিচার হয়নি।’
বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করাও শ্রমিকশক্তির অন্যতম লক্ষ্য।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available