• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১৩ই পৌষ ১৪৩২ সকাল ১১:৫০:২৬ (27-Dec-2025)
  • - ৩৩° সে:

চিরঞ্জীব এক নাম ‘হাদি’

২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ০৯:৩৯:৩২

সংবাদ ছবি

সিনথিয়া সরকার দ্বীনা: মৃত্যুই কি মানবজীবনের সমস্ত কিছু থামিয়ে দিতে পারে? একজন মানুষের যত অর্জন, যত শ্রম— সব কি এক নিমেষেই মুছে যায়; কেবল শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে?‎ ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে, মানুষের নিঃশ্বাস থেমে গেলেও তার কাজ থামে না। অর্থাৎ মানুষ নশ্বর, কিন্তু তার সৃষ্টি অবিনশ্বর। ‎মানুষের মৃত্যু ঘটলেও তার শ্রম, কাজ ও অবদান মুছে যায় না সময়ের গর্ভে। আর এর মাধ্যমেই মানুষ হয়ে ওঠে অমর। সেই সত্যের জ্বলন্ত উদাহরণ শরিফ ওসমান বিন হাদি।
‎ 
‎একটি গণঅভ্যুত্থান দ্বারা তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিলো। তিনি ছিলেন একজন বিপ্লবী, যিনি ছাত্র-নেতা ও সাধারণ জনগণের দাবিগুলো একত্রিত করেছিলেন। তিনি আন্দোলনকে বৃহত্তর রাজনৈতিক কাঠামোতে রূপ দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমরা তাঁকে পেয়েছি আমাদের ক্রান্তিকালে। তিনি ছিলেন অসীম সাহসী এক যোদ্ধা, যিনি দেশের স্বার্থে নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে জড়াতে উদ্বুদ্ধ করে গেছেন। বিশেষ করে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তিনি ব্যাপক আলোচিত হয়েছিলেন।

হাদির লক্ষ্য ছিলো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। এর অংশ হিসেবে তিনি 'ইনকিলাব মঞ্চ' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি ছিলেন এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র। এই মঞ্চের মূল উদ্দেশ্য হলো— একটি ন্যায়-ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, আন্দোলন-বিপ্লবে নেতাদের হয়ে দাবিগুলো সংগঠিত করা, প্রচলিত রাজনৈতিক দল ও পুরোনো রাজনীতিকে প্রশ্নের মুখোমুখি করা। তিনি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে গেছেন। যার ফলস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া। তার দীপ্ত ভাষণে সকলে অনুপ্রাণিত হয়েছে। 

‎বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক নতুন সম্ভাবনা। যার চোখ দিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন এদেশের মানুষ। কিন্তু হঠাৎ সেই স্বপ্নে ভাটা পড়ে যায়। ১২ ডিসেম্বর হাদি পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার এই অকাল মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বিরাট ধাক্কা স্বরূপ। তাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়েছে।

‎হাদির শ্বাস-প্রশ্বাস হয়তো থেমেছে কিন্তু তার কাজ থামেনি। তার সেই মতাদর্শ ও চেতনায় উজ্জীবিত তরুণ প্রজন্ম তার অসমাপ্ত দায়িত্ব সমাপ্ত করবে বলে জনগণ বিশ্বাসী। তিনি বেঁচে থাকবেন ততদিন, যতদিন বেঁচে থাকবে বাংলাদেশ। কেউ কেউ তার স্মৃতিকে ‘জাতীয় মুক্তির প্রতীক’ বলে অভিহিত করেছেন। কেউ কেউ তার বক্তৃতা ও ভাষাকে সংবেদনশীল হিসেবে দেখেছেন। সে যাই হোক, একজন মানুষের আলোচনা–সমালোচনা দুটোই থাকবে। কথায় আছে, সমালোচনা মানুষকে বড় করে। বিপরীত পক্ষের সমালোচনার মাধ্যমে নিজের দোষ–ত্রুটি খুঁজে পেয়ে নিজেকে সঠিক পথে পরিচালিত করেই তো মানুষ বিখ্যাত হয়ে ওঠে।

Ad

পৃথিবীর সব বড় বড় মনিষীর সমালোচক ছিল। তেমনি হাদিরও রয়েছে। তাইতো হাদি আজ এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তার মৃত্যু তাকে অতি জনপ্রিয় করে তুলেছে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রাণে বেঁচে থাকবেন আজীবন এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে হয়ে থাকবেন উজ্জ্বল নক্ষত্র।

Ad
Ad

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ

সংবাদ ছবি
ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ১১:৪৮:৩৫



সংবাদ ছবি
টিভিতে আজকের খেলা
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ১১:০৮:৫৯

সংবাদ ছবি
রাজীবপুরে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ১১:০৪:৫৪



সংবাদ ছবি
আজ এনআইডি নিবন্ধন ও ভোটার হবেন তারেক রহমান
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ১০:০৩:২২




Follow Us