• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ রাত ০৮:৫১:৩৭ (05-Dec-2025)
  • - ৩৩° সে:

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিদেশে সম্পদ অর্জনের ২৩ বস্তা আলামত জব্দ

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ১০:৪২:০১

সংবাদ ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিদেশে অর্জিত সম্পদ এবং অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজ রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যে ২৩ বস্তা আলামত জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বস্তায় বিদেশে সম্পদ অর্জনের নথি, বিল পরিশোধের তথ্য ও ভাড়া আদায়ের আলামত আছে বলে জানিয়েছে দুদক।

Ad

২১ সেপ্টেম্বর রোববার ভোরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিকলবাহা এলাকার সিকদার বাড়ি থেকে এসব আলামত জব্দ করা হয়।

Ad
Ad

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগীকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের ৫ দিনের রিমান্ড চলছে। রিমান্ডে পাওয়া তথ্যে জানলাম যে অনেকগুলো ডকুমেন্টস গায়েব করা হয়েছে, যেগুলো রুকমিলা জামানের ড্রাইভার ইলিয়াসের বাসায় রাখা হয়েছিল। পরশু (শুক্রবার) আমরা সেখানে অভিযান চালাই। কিন্তু আমাদের অভিযানের তথ্য পেয়ে বস্তাগুলো সরিয়ে ফেলে। ওই দিন আমরা বাসার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করি। ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আমরা যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে এই আলামতগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘পরে আমরা একটি ছোট বাসা থেকে ২৩ বস্তা আলামত জব্দ করেছি। কয়েকটি বস্তা খুলে দেখা গেছে, বিদেশে সম্পদ অর্জনের ক্রয় সংক্রান্ত পেমেন্ট, বাড়ি ভাড়া আদায়ের তথ্য, বিভিন্ন বিল পরিশোধ, কোর্টের আদেশসংক্রান্ত ডকুমেন্টস রয়েছে। এখনও সবগুলো বস্তার আলামত পর্যালোচনা করার সুযোগ হয়নি। কাজ চলছে।’

এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে দুদকের একটি টিম অভিযান চালিয়ে জাবেদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী উৎপল পাল ও আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে। ১৮ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদেরকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠান।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া উৎপল পাল আরামিট গ্রুপের এজিএম হলেও দীর্ঘদিন ধরে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে বিদেশে সম্পদ তৈরি ও দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতেন। দুদকের হাতে আটক হওয়ার সময় তার কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব ডিভাইস থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

উৎপল পাল দেশ থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার প্রক্রিয়ার মূল হোতা বা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করতেন।

অন্যদিকে আব্দুল আজিজ, আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের এজিএম হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তি কেনাবেচা, ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।

এর আগে, গত ২৪ জুলাই দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান বাদী হয়ে ভূমিমন্ত্রী জাবেদসহ ৩১ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছিলেন। মামলায় জাবেদ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- জাবেদের স্ত্রী ও ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামান (৪৬), ব্যাংকের পরিচালক আসিফুজ্জামান চৌধুরী (৪৬), জাবেদের বোন রোকসানা জামান চৌধুরী (৫৬) এবং ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ (৫৫)।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে খুলে দেওয়া হয় পাঁচটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান- ভিশন ট্রেডিং, আলফা ট্রেডার্স, ক্ল্যাসিক ট্রেডিং, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং। এরপর ইউসিবিএল ব্যাংকের চট্টগ্রাম বন্দর শাখায় এসব প্রতিষ্ঠানের নামে হিসাব খুলে গম, ছোলা, হলুদ ও মটর আমদানির নামে ২৫ কোটি টাকার টাইম লোন অনুমোদন করানো হয়। ব্যাংকের নিজস্ব ‘ক্রেডিট কমিটি’র ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ উপেক্ষা করে ২০২০ সালের ৮ মার্চ পরিচালনা পর্ষদ ওই ঋণ অনুমোদন দেয়। এরপর সেই টাকা ভাগ করে একই ব্যাংকে খোলা চারটি হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করে পাচার করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়- ব্যাংক পরিচালক, ঋণ আবেদনকারী এবং অনুমোদনকারী সবাই একে অপরের আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সমন্বিত চক্রান্তের মাধ্যমে এ লোন নেওয়া ও টাকা পাচার করা সম্ভব হয়।

ইউসিবিএল ব্যাংকের ‘করপোরেট ব্যাংকিং ডিভিশন ও ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন’-এর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট কমিটি ওই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছিল। নেতিবাচক প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই না করে ঋণ অনুমোদন করে। ঋণের টাকাগুলো ‘নামসর্বস্ব’ চারটি প্রতিষ্ঠান-আলফা ট্রেডার্স, ক্ল্যাসিক ট্রেডার্স, মডেল ট্রেডিং ও ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং-এর ব্যাংক হিসাবে পে অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। পরে তা নগদে উত্তোলন করা হয়। টাকা স্থানান্তর করা এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা আরামিট গ্রুপের কর্মচারী।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, এসব টাকা নগদে উত্তোলনের পর উত্তোলনকারী আরামিট গ্রুপের কর্মচারীরা পে অর্ডার, ভাউচারের মাধ্যমে ইউসিবিএল ব্যাংকের বহদ্দারহাট শাখায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের হিসাবে বিভিন্ন সময়ে জমা করেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, আসামিরা দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ




সংবাদ ছবি
কসবায় বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা
৫ ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ০৮:২৮:০৪

সংবাদ ছবি
খোকসায় তিনটি আগ্নেয় অস্ত্র উদ্ধার
৫ ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ০৮:২২:২৩



সংবাদ ছবি
ঢাকা ৩ আসনে অধ্যক্ষ মো. শাহিনুর ইসলাম’র গণমিছিল
৫ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৫:৫১

সংবাদ ছবি
ভূমিকম্পে আতঙ্ক নয়, সতর্ক হওয়ার আহ্বান
৫ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৭:৩৬



Follow Us