নিজস্ব প্রতিবেদক : মায়ানমারের রাখাইন (আরাকান) থেকে সীমান্ত পথে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের স্থলপথে এবং উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার নাফ নদ পাড়ি দিয়ে দিনে-রাতে এরা আসছেই। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসেই দেশে নতুন করে আরও দুই হাজার ৭৩৮ রোহিঙ্গা এসেছে।

ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ দিকে ক্যাম্পগুলোতে নতুন আগতদের একটি বড় ঢল তৈরি হয়। এদের সবার বায়োমেট্রিক নিবন্ধনকাজ চলছে। এদের মধ্যে নারী-শিশু বেশি, ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।


নতুন নিবন্ধিতদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ নারী ও শিশু, যাদের মধ্যে ১২ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী। রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, গুরুতর অসুস্থ রোগী, একক অভিভাবক, সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং ঝুঁকিতে থাকা বয়স্করা। বাংলাদেশে আসা সামগ্রিক রোহিঙ্গা জনসংখ্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হচ্ছে নারী, যা ৫২ শতাংশ। আর পুরুষ ৪৮ শতাংশ।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এমনিতেই মায়ানমারের রাখাইন থেকে সারা বছরই রোহিঙ্গাদের যাতায়াত রয়েছে। তবে ইদানীং মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে। বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এই অনুপ্রবেশের হার আরও বেড়েছে।
রাখাইনের মংডু থানার খিয়ারীপাড়ার একজন রোহিঙ্গা গতকাল বিকেলে মোবাইল ফোনে আলাপকালে জানান, রাখাইন রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় দুর্গম এলাকা থেকেই বেশির ভাগ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা আবুল কালাম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘এখানে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক।
কাজকর্ম বলতে কিছুই নেই। আমরা মংডু এলাকার বাসিন্দারা নাফ নদের তীরে বসবাস করার সুবাদে বাংলাদেশের নিত্যপণ্যের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু পূর্ব রাখাইনের ভুচিদং ও রাশিদং এলাকাটি নাফ নদ থেকে অনেক দূরে হওয়ায় বাংলাদেশের পণ্যেরও নাগাল পাওয়া যায় না। তদুপরি ওই এলাকায় মায়ানমার সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন আকিয়াব থেকেও পণ্যসামগ্রী সরবরাহে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে রোহিঙ্গারা চরম অভাবের মধ্যে আছে।’
নোয়াখালীর ভাসানচরসহ কক্সবাজার ও টেকনাফে রয়েছে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এসব ক্যাম্পে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। এ ছাড়াও গত দেড় বছরে নতুন করে আসা আরও প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে ক্যাম্পের বাইরে। বর্তমানে যেসব রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটছে এসব উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পসংলগ্ন স্থানীয়দের বাসাবাড়ি ভাড়া নিচ্ছে। অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের শ্রমের বাজার দখলে নিয়ে এবং মায়ানমার থেকে চোরাই পথে মাদকের কারবারে জড়িয়ে জীবন যাপন করছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available