নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শুনানির দিন আজ। ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

২৩ নভেম্বর রোববার সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও তৎপর দেখা গেছে।


বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে গ্রেফতার ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে সকালে হাজির করা হবে। আজ এই সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ফেরতসংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং পলাতক শেখ হাসিনা, তারেক সিদ্দিকী ও কামালের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।
এর আগে এর আগে গত ২২ অক্টোবর গুমের দুই মামলায় ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর দিন ঠিক করা হলেও পরে তা পিছিয়ে ২৩ নভেম্বর ধার্য করা হয়।
গত ৮ অক্টোবর পৃথক দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পাশাপাশি শুনানির জন্য ২২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১।
র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) গোপন সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়। অন্যরা হলেন– শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, র্যাব কর্মকর্তা কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, মাহবুব আলম, আবদুল্লাহ আল মোমেন, সারোয়ার বিন কাশেম, খায়রুল ইসলাম, মশিউর রহমান জুয়েল ও সাইফুল ইসলাম সুমন। এর মধ্যে ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ২২ অক্টোবর হাজির করা হয়।
এ ছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায়ও শেখ হাসিনা-তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম রয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন– ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) লে. জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব) মো. সাইফুল আলম, সাবেক ডিজি লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী ও লে. কর্নেল (অব) মখসুরুল হক। এর মধ্যে ওইদিন তিনজনকে আনা হয়।
এ দুই মামলায় কারাগারে থাকা ১৩ সেনা কর্মকর্তা হলেন– র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী।
১২ অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর সেখানে তাদের রাখা হয়েছে।
২০ নভেম্বর থেকে পিছিয়ে আগামী ২৩ নভেম্বর ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available