আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় এবং ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষ, শিশুদের অপুষ্টি, হাসপাতালের ওষুধ ও জ্বালানির সংকট মিলিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে এক চরম মানবিক ট্র্যাজেডি। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে— গাজায় অবিলম্বে নিরাপদ, টেকসই এবং ধারাবাহিক খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছানো জরুরি।
৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস সতর্ক বার্তা দিয়ে বলেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে এবং তা রোধে নিয়মিত মানবিক সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি জানান, ডব্লিউএইচও সম্প্রতি আল নাসের হাসপাতালে জরুরি পুষ্টিসামগ্রী সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে ছিল ৪ হাজার ৯০০ ইউনিট শিশুখাদ্য ও উচ্চ-প্রোটিন ফর্মুলা এবং ২ হাজার ফিডিং কম্পোনেন্ট। এগুলো বিশেষভাবে প্রিম্যাচিউর নবজাতক, হাসপাতালে ভর্তি এমন শিশু যারা চিকিৎসাগত কারণে মাতৃদুগ্ধ পান করতে পারে না, এবং গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে।
টেড্রোস তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, এই সরবরাহগুলো শুধু ক্ষণস্থায়ী নয়— বরং এগুলোকে বৃহত্তর ও টেকসই মানবিক লাইফলাইনের অংশ হতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা বিচ্ছিন্নভাবে নয়, ধারাবাহিকভাবে পৌঁছানো উচিত। “আমরা গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী প্রবেশাধিকার চাই। অন্যথায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধসে পড়বে, যা ইতোমধ্যেই বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে।”
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাও এর আগেই সতর্ক করেছে যে, গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ওষুধ, খাদ্য ও জ্বালানি নেই, ফলে জরুরি সেবা দিতে পারছে না চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্যব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। টেড্রোস এ প্রেক্ষাপটে বলেন, “সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ হলো শান্তি।”
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অঞ্চলটির অধিকাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং মানুষকে বারবার গৃহহীন হয়ে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্যমতে, গাজার কিছু অংশ ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়েছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available