• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ভোর ০৪:৫০:২৫ (23-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:

সুদের টাকা দিতে না পারলে গহনা ভেঙে বিক্রি করব

২২ নভেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৮:৪৯

সংবাদ ছবি

ডুমুরিয়া-পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার ডুমুরিয়ার শাহপুর বাজারে অবস্থিত শাপলা জুয়েলার্সের মালিক নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের স্থানীয় ডাকসাইটের নেতা আব্দুল হালিম গাজী। তিনি জুয়েলারি ব্যবসায়ী হলেও সেখানে স্বর্ণের কোনো গহনা দেখা যায়নি। রয়েছে বিভিন্ন ফাইল পত্র ভর্তি আলমারি শোকেস। তার ব্যবসা বন্ধকী ব্যবসা। নিজেই সুদের হার ও বন্ধকী নিয়ম উল্লেখ করে নোটিশ টানিয়ে দিয়েছেন।

Ad

অভিযোগ রয়েছে চড়া সুদে তিনি স্বর্ণের গহনা, জমি বন্ধক রেখে টাকা দেন। তবে মেয়াদ শেষ হলে বা প্রতিমাসে সুদের টাকা দিতে না পারলে তিনি সেসব গহনা বিক্রি করে দেন। কেউ প্রতিবাদ করতে পারেননি বিগত ১৬ বছরে। বর্তমানে তিনি আরও বেপরোয়া। সরকারি জমিতে তৈরি করছেন ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন। বাজারের পাশেই রয়েছে মুন ও স্টার নামে দুটি আলিশান বাড়ি।

Ad
Ad

সরেজমিনে গিয়ে একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হালিম গাজী ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে শাহাপুর বাজারে পিছনের অংশে জেলা পরিষদ ও সামনের অংশে সড়কের জমির উপর একটি ৪ তলা ভবন নির্মাণ করেন। কিন্তু তিনি এভাবে সরকারি জমির উপর ভবন নির্মাণ করলেও সে সময় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। এভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতা অবৈধভাবে সরকারি জমিতে করে ৪ তলা ভবন কীভাবে নির্মাণ করলো সেটাই আমরা ভেবে পাচ্ছি না।

এসব বিষয়ে গত রোববার মো. হালিম গাজীর কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সাথে রূঢ় আচরণ করেন। তিনি সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র দেখতে চান। এক পর্যায়ে মারমুখী আচরণ করেন। তিনি বলেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তার কারবার চলে। কেউ কিছু করার ক্ষমতা রাখেন না।

বন্ধকী স্বর্ণ বা অন্য সম্পদ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুদের টাকা ঋণ গ্রহীতাকে সময় মত পরিশোধ করতে হবে, না হলে ওটা আমি বিক্রি নিজের টাকা তুলে নেই। আমি তো জনসেবা করতে বসিনি। আপনাদের কোনো ক্ষমতা থাকলে করেন। আর পেপার পত্রিকায় লিখলে কিছু হয় না। প্রশাসন আমার হাতের মুঠোয় থাকে। তাদেরকে ম্যানেজ করেই আমি ব্যবসা করি।

শাহপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানালেন, শাপলা জুয়েলার্সের মালিক মো. হালিম গাজী বন্ধকী ব্যবসা করেন। অনেকের গহনা বিক্রি করে দেন এমন অভিযোগ আমরাও শুনেছি। এছাড়া বাজারের সরকারি জমিতে তার ভবন নির্মাণের অভিযোগে স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিনে পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে গাজী মুজিবার রহমান মাইক মুজিবার, শাহপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি একেএম জাফর ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক গাজীসহ স্থানীয়রা রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ ভবন উচ্ছেদ পূর্বক অপসারণ করতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।  

ডুমুরিয়া উপজেলার থুকড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) নিলুফার ইয়াসমিন বলে, আমি মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেখতে গিয়েছিলাম। এরপর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( মুহাম্মদ আল আমিন) স্যারের নির্দেশে ওই জমি মাপজোপ করে সরকারের সম্পত্তি পাওয়া গেছে। তাদেরকে স্থাপনা সরিয়ে নিতে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছি। তাছাড়া সরেজমিন তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, কোনো ব্যক্তি সমস্যায় পড়ে যদি স্বর্ণ বা জমি বন্ধক রাখে সেটার একটি নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালার বাইরে কিছু করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে কারও ভবন নির্মাণের অধিকার নেই। বিষয়টি আমরা দেখে ব্যবস্থা নিব।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ












Follow Us