রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে পুকুরে ডুবে মারা গেছে ৬ জন। এদের মধ্যে পাঁচ শিশু ও এক তরুণ রয়েছে। এই নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক।

সর্বশেষ খালের পানিতে ডুবে মোহাম্মদ সাগর (২০) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। ৩০ অক্টোবর বিকেলে উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের গুমাই বিলের কুলকুরমাই অংশে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সাগর চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রামের মো. জয়নালের ছেলে।


এর আগে ২৯ অক্টোবর সকালে মারা গেছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সম্পূর্না সাহা মিমি (৯)। স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের মহাজন বাড়ি এলাকায় গোসল করতে গিয়ে সে পুকুরে ডুবে যায়। মিমি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এর আগে ২৬ অক্টোবর চন্দ্রঘোনায় মারা যায় ১২ বছরের মো. ইয়াছিন। আর ২৪ অক্টোবর পারুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ায় একসঙ্গে ডুবে মারা যায় তিন শিশু সুমাইয়া আক্তার (১১), রুবিনা পারভীন হাবিবা (৭) ও জান্নাত আক্তার (১০)।
রাঙ্গুনিয়ার গ্রামেগঞ্জে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পুকুর রয়েছে। সাঁতারের প্রশিক্ষণ না থাকা, পুকুরে নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকা এবং শিশুদের একা গোসল করতে পাঠানো, এই তিন কারণেই ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, ‘প্রায় প্রতিমাসেই ডুবে যাওয়া শিশু আসে। অনেককে বাঁচানো যায় না। কারণ, উদ্ধার ও হাসপাতালে আনার মধ্যেই সময় ফুরিয়ে যায়।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্ঘটনা রোধে পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসন উভয়কেই সচেতন হতে হবে। শিশুদের কখনো একা পুকুরে নামতে দেওয়া যাবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সাঁতার প্রশিক্ষণ চালু করা যেতে পারে। বাড়ির পুকুরে ব্যারিকেড বা বাঁশের ঘের দেওয়া জরুরি। ইউনিয়ন পর্যায়ে পানি নিরাপত্তা নিয়ে প্রচারণা চালানো দরকার।
অভিভাবক সৌরভ সাহা বলেন, ‘প্রতিবারই একটা শিশু হারানোর পর আমরা কাঁদি, তারপর আবার ভুলে যাই। এখন সময় এসেছে প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available