পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি পুকুর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় ৮টি কুকুরছানার বাচ্চা উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাচ্চাগুলোকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদীর আবাসিক এলাকার পুকুরে বস্তা ভাসতে দেখেন পথচারীরা। সেটি খুলে ভিতরে ৮টি মৃত কুকুরছানা দেখতে পায়। এর আগে সকাল থেকে একটি মা কুকুরকে অস্থির হয়ে চিৎকার করতে দেখা যায়। তার ডাকের সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন দোকানদার পুকুরপাড়ে গিয়ে বস্তাটি দেখতে পান।


এদিকে এই ঘটনায় ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সভ্য মানবজাতির জন্য এ ধরনের কাজ কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। আমার সাবেক কর্মস্থলে আমার পোষা কুকুর ছিল, যার একটির নাম লাল্টু। তার জন্ম থেকে আমি লালন পালন করেছি। আমার বদলির পরও সেখানে কুকুরছানাদের ওপর অন্ধকার নেমে আসে। আজ সকালে শুনেছি, উপজেলা পরিষদের একজন সরকারি কর্মকর্তা ও তার পরিবার এই কুকুরছানাগুলোকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন। আমি বর্তমান সরকারের কাছে এই হত্যার বিচার চেয়েছি এবং সবাইকে বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই। মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট আমি আজ মন থেকে অভিশাপ দিয়েছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় হাফিজুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই মা কুকুরটি বারবার চিৎকার করছিল। আমরা তার ডাক অনুসরণ করে পুকুরপাড়ে গিয়ে বস্তাটি খুলি। ভেতরে সব কুকুরছানা মৃত অবস্থায় ছিল। কেউ খুব নিষ্ঠুরভাবে-এ কাজ করেছে।
উপজেলা পরিষদ এলাকার বাসিন্দা রওশন আলী বলেন, নিরীহ প্রাণীর ওপর এমন নির্মম আচরণ কখনো মানবিকতার মধ্যে পড়ে না। যারা এটি করেছে, তাদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়া উচিত।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে চায়ের দোকানি বাবুল হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা আগে এলাকায় দেখিনি। কুকুরগুলো কারও ক্ষতি করত না।
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আমরা প্রতিদিন এখান দিয়ে কলেজে যাই। এ ঘটনা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি। প্রাণীও প্রাণ-এভাবে হত্যা করা অপরাধ। প্রশাসনের উচিত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, বস্তাবন্দি কুকুরছানাগুলোর মৃত্যু সত্যিই নৃশংস। পশু কল্যাণ আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য। আমরা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে সহযোগিতা করছি, যাতে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা যায়।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুর নূর বলেন, যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে পুরো বিষয়টি অনুসন্ধান করছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available