খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িতে শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের জেরে চলা সড়ক অবরোধ স্থগিতের পর এবার পুরোপুরি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’।
৪ অক্টোবর শনিবার সকালের দিকে জুম্ম ছাত্র-জনতার মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অবরোধ প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শহীদদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুণ্যকর্ম সম্পাদন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রশাসনের আশ্বাসকে আংশিক বিবেচনায় রেখে এই অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জুম্ম ছাত্র-জনতা তাদের আট দফা দাবি, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার এবং সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। আলোচনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয় এবং শহীদ পরিবারের প্রতি নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করার বিষয়টি জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিবৃতিতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যতম সমন্বয়ক উক্যনু মারমাকে ইউপিডিএফ সংশ্লিষ্ট হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, সেই ‘ট্যাগ’ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে অনলাইনে পাহাড় সম্পর্কে গুজব ও বিভ্রান্তিকর প্রপাগান্ডা ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন এবং পরদিন পুলিশ শয়ন শীল (১৯) নামে এক সন্দেহভাজন যুবককে আটক করে। পরে তাকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
এই ঘটনার জেরে গেল ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার অর্ধদিবস অবরোধ পালনের পর টানা চারদিন সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ পালন করে জুম্ম ছাত্র-জনতা। এর মধ্যেই গেল ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির গুইমারায় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকা সত্ত্বেও দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিন পাহাড়ি যুবক নিহত হন। ওই হামলায় সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ মোট ২০ জন আহত হন। সৃষ্ট ঘটনার তদন্তে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এদিকে, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি পৃথক মামলা করেছে। এর মধ্যে গুইমারার রামসু বাজার সহিংসতায় ৬০০-৭০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
অপরদিকে, ধর্ষণের শিকার মারমা কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের তিনজন চিকিৎসকের সমন্বিত মেডিক্যাল বোর্ড।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available