দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে বাঘুটিয়া ও বাচামারা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এতে একাধিক স্কুল, মাদ্রাসা, বাজার এবং বিভিন্ন সরকারি স্থাপনাসহ বসতবাড়ি-ঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় যমুনা নদীর ভাঙ্গন রোধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় দুই ইউনিয়নের জনগণ।
কৃষক দল নেতা সেলিম মিঞার সঞ্চালনায় এবং বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক যুবদলের সভাপতি কামরুল হাসান বাচ্চুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে সাধারণ জনগণের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ারের হোসেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র ড. খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু।
২২ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বাজার এলাকার যমুনা নদীর তীরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো অসংখ্য মানুষ ও স্থানীয়রা অংশ নেন।
মানববন্ধনে স্থানীয়রা বলেন, যমুনা নদীতে অপরিকল্পিত এবং অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে অসময়ে এ নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালুমাটি কাটা হতো। তা এখনো বন্ধ হয়নি। এর প্রভাবেই অসময়ে নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও হ্রাস পেলে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করে।
যমুনার ভাঙ্গনে বিগত এক বছরে কৃষকের শত-শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে আরো ফসলি জমিসহ বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু বলেন, ‘যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাঘুটিয়া ও বাচামারা ইউনিয়নের বহু পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরও এ এলাকায় বালু দস্যুতা বন্ধ হয়নি। আমাদের দলের এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত এখন অবাধে বালু তুলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি করেছে। আমি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে অনুরোধ করব, আমাদের দলের যারা এ বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিন।’
এসময় তিনি প্রশাসনকে সতর্ক করে বলেন, ‘আপনাদের একাধিকবার বলা হলেও কোনো অদৃশ্য কারণে আপনারা বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ইজারাকৃত বালু মহলের বাইরে এসে যারা বলগেট দিয়ে বালু উত্তোলন করে আপনারা তাদের সহযোগী হয়ে কাজ করছেন। বালু উত্তোলনে ব্যবহার হচ্ছে কাটার মেশিন ও শতশত বলগেট। কাটার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন সকাল, সন্ধ্যা, রাত পর্যন্ত বালু উত্তোলন করা হয়। এবার যদি বালু উত্তোলন বন্ধ না হয়, সাধারণ জনগনকে নিয়ে ভাঙ্গন রোধে বাধা হয়ে দাঁড়াবো।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিবালয় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কাজী আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মহিদুর রহমান, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান মাষ্টার, দৌলতপুর উপজেলা কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সার্জেন্ট শাহীন, খলসী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডা. আব্দুল মান্নান, বাঁচামারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইয়াহিয়া মোল্লাহ, দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক রহিম শেখ, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি নেতা হিমু খান, দৌলতপুর উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম লিটন, শিবালয় উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল রাজবংশী, খলসী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক প্রমুখ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available