শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিয়ারচড় চৌকিদার বাড়ি মোড়ে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নিয়মিতভাবে বসছে জমজমাট কলার হাট। স্থানীয় কৃষক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সরব উপস্থিতিতে হাটটি অল্প সময়ের মধ্যেই এ অঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ত কলার বাজারে পরিণত হয়েছে।

বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইদ্রিস আলী জানান, শ্রীবরদী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামসহ আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য কৃষক তাদের উৎপাদিত কলা নিয়ে এই হাটে আসেন। কৃষকদের নিরাপত্তা ও সুবিধার কথা মাথায় রেখে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে হাট পরিচালনা করা হচ্ছে, যাতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই নির্বিঘ্নে লেনদেন করতে পারেন।


হাটে আসা একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে কলার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় এবং বাজারদর সন্তোষজনক থাকায় তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এতে কৃষক পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আগের তুলনায় আরও দৃঢ় হচ্ছে।
স্থানীয় কলা চাষি আমজাদ হোসেন বলেন, আগে আমাদের কলা বিক্রি করতে আলাদা বাজারের খোঁজে যেতে হতো। অনেক সময় ন্যায্য দামও পাওয়া যেত না। এখন এখানে প্রতিদিন হাট বসায় সহজেই কলা বিক্রি করতে পারছি। দামও ভালো মিলছে, এতে আমাদের সংসার চালানো অনেক সহজ হয়েছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী লিমন হালদার বলেন, এই হাটে প্রতিদিন প্রচুর তাজা কলা পাওয়া যায়। এক জায়গা থেকেই বড় চালান সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই কমছে। শ্রীবরদীর কলার হাট আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের জন্য খুব উপকারে এসেছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ তাজা কলার সরবরাহ থাকায় বড় চালান সংগ্রহে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এখান থেকে সহজেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বাজারে কলা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, প্রতিদিনের এই কলার হাট শ্রীবরদী অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিকে নতুন গতি দিচ্ছে। শুধু ব্যবসায়িক লেনদেন নয়, কলা পরিবহন, লোডিং আনলোডিং, বাজার ব্যবস্থাপনা ও আনুষঙ্গিক কাজে যুক্ত হয়ে অনেক শ্রমিকেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
বাজার সভাপতি ইদ্রিস আলী আরও বলেন, এই কলার হাট এখন শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের কৃষক ও ব্যবসায়ীদের একটি নির্ভরযোগ্য বিপণন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হাটটির ভূমিকা দিন দিন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।”
এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আকন্দ জানান, সদর ইউনিয়নের কলাকান্দা গ্রাম এ অঞ্চলের অন্যতম বড় কলা উৎপাদন এলাকা। সেখানে প্রায় ৭০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে বছরে যেখানে প্রায় ১ কোটি টাকার কলা বেচাকেনা হতো, বর্তমানে প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৮০ লাখ টাকার কলা কেনা-বেচা হচ্ছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, সঠিক পরিচর্যা ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ অঞ্চলে কলা উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available