• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২০শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ১০:৩৮:০৮ (03-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২০শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ১০:৩৮:০৮ (03-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

রাজশাহীতে চিনির বিকল্পে স্টেভিয়ার চাষ

২০ এপ্রিল ২০২৪ বিকাল ০৩:৫৪:৫৬

রাজশাহীতে চিনির বিকল্পে স্টেভিয়ার চাষ

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী: স্টেভিয়ার গাছটি বহুবর্ষজীবী এবং ৬০ থেকে ৭৫ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়। পাতা আকার বর্ষাকৃতি, ফুল সাদা এবং বীজ ক্ষুদ্রাকৃতি। স্টেভিয়ার গাছের পাতার নির্যাস চিনির চেয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু পূর্ব থেকে এর চাষ ও ব্যবহার শুরু হলেও আমাদের দেশে এর চাষ নতুন। আমাদের দেশের মাটি এবং জলবায়ু স্টেভিয়া চাষের জন্য বেশ উপযোগী।

সুগার গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এইচস এম আল-আমিন বলেন, সম্প্রতি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা এবং কাশিডাঙ্গ ও শিতলা নামক এলাকায় স্টেভিয়ার পরিক্ষামূলক চাষাবাদ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় জেলার ৯ শতক জমি নিয়ে ১৮০০টি স্টেভিয়ার চারা রোপণ করা হয়েছে। জেলার চারঘাট উপজেলার মোহাম্মদ আলী তার ৩ শতক জমি নিয়ে এই নতুন সম্ভবনার চাষাবাদ শুরু করেছেন।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, ২০১৬ সালে সমাজ বিজ্ঞানে এম এ শেষ করে সে কৃষি উদ্যোগতা হওয়ার প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন। বর্তমান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান এবং সুগার গবেষণার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এইচ এম আল-আমিন সর্বত্র সহযোগিতা করছেন।    

প্রসঙ্গত, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এইচ এম আল-আমিন জানান, স্টেভিয়া সুদুর পেরাগুয়ে থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। মূলত চিন, জাপানসহ অনেক দেশে এর প্রচলন রয়েছে। বর্তমান দেশের অনেক জেলায় এর চাষবাদ শুরু হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এর ব্যবহার ব্যাপক হবে বলে তিনি আশা করছেন। সাধারণত জৈবসারযুক্ত এবং পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থাসম্পন্ন দোঁআশ মাটিতে স্টেভিয়া ভাল হয়। বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় অল্প রোদ্রযুক্ত স্থানেও টবে স্টেভিয়ার চাষ করা যায়। এ ক্ষেত্রে টবের তিন ভাগের একভাগ পঁচা গোবর শুকনো সার এবং দো-আঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি উত্তমভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। পানি যাতে জমে না থাকে সেভাবে প্রতিদিন পানি দিতে হবে। চারা রোপণের ২০-২৫ দিন পর এর পাতা সংগ্রহ করা যায়। পাতা সংগ্রহের পর শুকিয়ে গুঁড়া করে বায়ুরোধী পলিথিনে বা কৌটায় সংরক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজনে পরে ব্যবহার করা যাবে। স্টেভিয়ার পাতা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মহা ঔষধ ।

এই অগ্নাশয়ের বিটা কোষের সক্রিয়তার মাধ্যমে ইনসুলিন নিঃসরণ বৃদ্ধি করে এবং ব্লাড সুগার লেভেল কমিয়ে রাখে। স্টেভিয়ার সবুজ ও শুকনো পাতা সরাসরি চিবিয়ে কিংবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে বোতলে সংরক্ষণ করা যায়। স্টেভিয়া উপকারি এক ভেষজ উদ্ভিদ যা বিশ্বে সুপরিচিত। এই পাতা ডায়বেটিক রোগীদের জন্য মহা ঔষধ। এটি গুল্ম-জাতীয় বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ। যেটা ন্যাচারাল সুইটেনার হিসাবে পরিচিত। স্টেভিয়ার পাতা চিনির চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ মিষ্টি এবং এর পাতায় বিদ্যমান স্টেভিওসাইড চিনির চেয়ে বহুগুণ মিষ্টি (১৫০ গুণ)। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয়, এতে কোন ক্যালরি নেই। অর্থাৎ যেখানে আমরা ১ গ্রাম সুক্রোস থেকে পেয়ে থাকি ৪ ক্যালরি, সেখানে স্টেভিয়া থেকে প্রাপ্ত ক্যালরি হবে শুণ্য। এটা প্রাকৃতিক কিন্তু চিনি এবং মিষ্টি-জাতীয় খাবারের বিকল্প । যে কোন প্রচলিত মিষ্টি-জাতীয় খাবারে ব্যবহারযোগ্য ।

ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস রোগ থেকে বাঁচতে এবং চিনির ক্ষতিকর দিক এড়িয়ে যেতে স্টেভিয়ার পাতা বা পাতার গুঁড়া অথবা লিকুইড নিয়মিত অল্প পরিমাণে সেবন করতে পারেন। স্টেভিয়ার পাতায় বিভিন্ন খনিজ, বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি রয়েছে। স্টেভিয়া ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ ও উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি লিভার ও প্লিহায় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরনে সহায়তা করে। ডায়াবেটিক রোগীরা চক্ষু, কিডনী, ফুসফুসের রোগ এবং গ্যাংগ্রীন (পঁচনশীলক্ষত) থেকে বাঁচতে স্টেভিয়া গাছের পাতা বা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।

সবুজ পাতা চিবিয়েও খাওয়া যায়। স্টেভিয়া পাতার গুঁড়া (ডাস্ট)/ নির্যাস (লিকুইড) সরাসরি অথবা চা বা কফির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। স্টেভিয়া পাতার গুঁড়া মিষ্টি তৈরীতে বা মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরীতে ব্যবহার করা যায়। অল্প পানিতে শুকনো পাতা বা পাতার গুঁড়া ভিজিয়ে ১০ মিনিট পর গরম পানি মিশিয়ে হারবাল টি হিসেবে পান করতে পারেন।

স্টেভিয়া পাতার উপকারিতা পাওয়া যায়, এই পাতা চিনির চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি মিষ্টি চিনির চেয়ে ৩০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিস্ময়কর বিষয় যে, এতে কোন ক্যালরি নেই, নেই কোন কার্বোহাইড্রেট। প্রচন্ড মিষ্টতা সত্ত্বেও মানবদেহে ব্লাড সুগারের পরিমাণ বিন্দুমাত্র বাড়ায় না। উপাদানটিতে অ্যাসপার্টেম, সেকারিন, সুক্রলস বা কৃত্রিম মিষ্টি জাতীয় কোনো জিনিস নেই। ক্ষতিকর চিনির বিকল্প হিসেবে ডায়াবেটিক রোগীসহ সকলে খেতে পারবে। স্টেভিয়ার পাতা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মহা ঔষধ। স্টেভিয়ার পাতার পাউডার শরবত, পায়েশ, মিষ্টি দই, কেক, পুডিং, আইসক্রিম ইত্যাদি তৈরি করে খাওয়া যাবে। অথবা রাতে তাজা বা শুকনো পাতা বা এর গুঁড়া ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই মিষ্টি পানি খাওয়া যাবে।

সরাসরি তাজা পাতা বা গুঁড়া মুখে দিয়ে খাওয়া যাবে। আবার তাজা পাতা ছেচেঁও খাওয়া যাবে কোন খাবারে; যেমন চা/ কফি বা অন্য যে কোন খাবারের সাথে। পাতা কুচি কুচি করে কেটে সালাদে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। পানের সাথে জর্দ্দার পরিবর্তে মিষ্টি পান হিসেবে খাওয়া যাবে। চা বা কফির সাথে ব্যবহারের জন্য চা চামচের চার ভাগের একভাগ স্টেভিয়ার পাউডার চায়ের কাপে ঢেলে নিয়ে চামচ দিয়ে নেড়ে প্রিজ দিয়ে চা কাপটা ঢেকে রাখুন ২/৩ মিনিট। পরে আবার চা চামচ দিয়ে নেড়ে পান করুন। মিষ্টি কম বেশি করতে পাউডার কম বা বেশি করে ব্যবহার করবেন । অল্প পানিতে শুকনো পাতা বা পাতার গুড়া ভিজিয়ে ১০ মিনিট পর গরম পানি মিশিয়ে হারবালটি হিসেবে পান করতে পারেন।

পাতার গুঁড়ো দিয়ে মিষ্টান্ন তৈরি করে ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত এ ঔষধি গাছের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। জাপানে হালকা পানীয় কোকাকোলাতে স্টেভিয়া ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও কনফেকশনারি, ক্যান্ডিসহ বিভিন্ন প্রকার খাদ্যদ্রব্যে চিনির বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। চা ও কফিতে স্টেভিয়ার ব্যবহার বিশ্বব্যাপী। বাসাবাড়িতে টবে বা পটে সহজেই স্টেভিয়া চাষ করা যায়। তবে গাছের টব রৌদ্রযুক্ত বারান্দায় বা ছাদে রাখতে হবে। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত স্টেভিয়ার ছোট চারা নিষ্কাশনযুক্ত দো-আঁশ মাটিতে অথবা দো-আঁশ ও জৈব সার মিশ্রিত ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি মাটির টবে সারাবছর রোপণ করা যায়। এ গাছের চারা রোপণের ২৫ থেকে ৩০ দিন পর পাতা সংগ্রহ করা যায়। গাছে ফুল আসার ২৫ থেকে ৩০ দিন পর থেকে ওপরের অংশ ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। পরে গাছের গোড়া থেকে একসঙ্গে অনেক চারা বের হতে থাকে এবং ২০ থেকে ২৫ দিন পর পুনরায় পাতা সংগ্রহ করা যায়।

স্টেভিয়ার বিশেষ কার্যকারিতা হলো, ডায়াবেটিস তথা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন প্রতিরোধ করে, যকৃত, অগ্ন্যাশয় ও প্লীহায় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে, স্টেভিওসাইড অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণে সহায়তা করে, ত্বকের ক্ষত নিরাময় ও দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দমন করে, খাদ্য হজমে সহায়তা করে, স্টেভিয়াতে কোনো ক্যালরি না থাকায় স্থূলতা রোধ করে, শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে, মিষ্টি জাতীয় খাবারে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়, খাবারে গুণাগুণ বৃদ্ধি করে ও সুগন্ধ আনয়ন করে, শরীরের সুস্থতা ও সতেজতাবোধ সৃষ্টি করে।

এটি ব্যাকটেরিয়া সাইডাল এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। দাঁতের ক্ষয়রোগ রোধ করে। স্কিন কেয়ার হিসেবে কাজ করে, তাই ত্বকের কোমলতা এবং লাবণ্য বৃদ্ধি করে। স্বাদ বৃদ্ধিকারক হিসেবেও স্টেভিয়ার অনেক চাহিদা রয়েছে।  চা, কফি, মিষ্টি, দুই, বেকারি ফুড, আইসক্রিম, কোমল পানীয়সহ এ জাতীয় নানা খাদ্যপণ্যে তৈরিতে স্টেভিয়া ব্যবহার করা যায়। ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়। এর ভেষজ উপাদান মানুষের দেহে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। স্টেভিয়ার পাতা চিনির চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুন মিষ্টি এবং এর পাতায় বিদ্যমান স্টেভিওসাইড চিনির চেয়ে বহুগুন মিষ্টি (১৫০ গুন)। পরিবারের সবাই এই চিনি খেতে পারবে। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য চিনির বিকল্প স্টেভিয়া।

স্টেভিয়া পাতার ব্যবহারের নিয়ম হলো, এটি চা, কফি, মিষ্টি, দই, বেকড ফুড, আইসক্রিম, কোমল পানীয় ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। স্টেভিয়ার সবুজ ও শুকনো পাতা সরাসরি চিবিয়ে কিংবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে বোতলে সংরক্ষণ করা যায়। পাতার গুঁড়ো দিয়ে মিষ্টান্ন তৈরি করে ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন। দীর্ঘদিন ব্যবহৃত এ ওষুধি গাছের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। জাপানে হালকা পানীয় কোকাকোলায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কনফেকশনারি, ক্যান্ডিসহ বিভিন্ন খাবারে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চা-কফিতে স্টেভিয়ার ব্যবহার বিশ্বব্যাপী।

এর গুণাবলি হচ্ছে, স্টেভিয়ায় অ্যাসপার্টেম, সেকারিন, সুক্রলস বা কৃত্রিম মিষ্টি জাতীয় কোন জিনিস নেই। স্টেভিয়ার মধ্যে কোন কার্বোহাইড্রেট কিংবা ক্যালরি নেই। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনির সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক বিকল্প। এছাড়া এরমধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বিনষ্টকারী প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান। এবং উপকারিতা হলো, ক্যালরিমুক্ত এ মিষ্টি ডায়াবেটিস রোগী সেবন করলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ পরিবর্তন হয় না। উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধ করে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ