• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ১০ই পৌষ ১৪৩২ রাত ০৮:২৭:০৩ (24-Dec-2025)
  • - ৩৩° সে:

একনজরে তারেক রহমান

২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ দুপুর ০২:৫০:০৮

সংবাদ ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর আগে তিনি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী রাজনৈতিক উত্থান-পতনের একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী ও অংশগ্রহণকারী।

Ad

তারেক রহমানের জন্ম ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর। যদিও ইংল্যান্ডে তার ব্যবসায়িক নথিতে জন্ম সাল ১৯৬৭ সাল উল্লেখ করেছেন তিনি নিজেই। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দম্পতির প্রথম সন্তান।

Ad
Ad

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, যখন তার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, তখন তারেক রহমান, তার মা ও ভাইসহ আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।

সে সময় তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কারাবন্দি হওয়া সর্ব কনিষ্ঠদের একজন। ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে তিনি ১৯৮০-এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময় তিনি সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল, হবস, লক, রুশো, ভলতেয়ার, কার্ল মার্কসসহ প্রখ্যাত দার্শনিক ও চিন্তাবিদদের রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেন।

১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের পাতানো নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি গৃহবন্দিত্ব এড়িয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি তুলে ধরেন, কীভাবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছিল। এর পরপরই জেনারেল এইচ এম এরশাদের স্বৈরাচারী সরকার তার কণ্ঠ রোধ করতে তাকে ও তার মা বেগম খালেদা জিয়াকে একাধিকবার গৃহবন্দী করে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি তার মায়ের সঙ্গে রাজপথে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৮৮ সালে গাবতলী উপজেলা ইউনিটের সাধারণ সদস্য হিসেবে বিএনপিতে যোগ দেন।

তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনের মাধ্যমে তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং এরশাদ সরকারের পতনে ভূমিকা রাখেন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় প্রচারণায় অংশ নেন। ওই নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন।

দলীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তিনি বগুড়ায় তৃণমূল থেকে নেতা নির্বাচনের উদ্যোগ নেন। ১৯৯৩ সালে বগুড়া জেলা ইউনিটে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেন, যেখানে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়।

এই সফল উদ্যোগের পর তিনি অন্যান্য জেলা ইউনিটকেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচনে উৎসাহিত করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের আগে তিনি স্থানীয় সমস্যা ও সুশাসন নিয়ে গবেষণার জন্য ঢাকায় একটি কার্যালয় স্থাপন করেন। সেখানে তিনি বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করেন। তার এই উদ্যোগের ফলেই ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। চেয়ারপার্সনের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও এবং তৃণমূল থেকে ব্যাপক সমর্থন থাকলেও তিনি কোনো মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্যপদ গ্রহণ করেননি। বরং তিনি দলের তৃণমূল শক্তিশালী করার কাজেই মনোযোগ দেন। এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালে বিএনপির স্থায়ী কমিটি তাকে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে মনোনীত করে।

দলের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে নিয়োগ লাভের পরপরই তারেক রহমান দেশব্যাপী দলের মাঠপর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের সাথে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেন। মূল সংগঠনসহ সহযোগী সংগঠন যেমন জাতীয়তাবাদী যুব দল, জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ইত্যাদি আয়োজিত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তারেক রহমান কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ও মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ও মতামত গ্রহণ করেন। মূলত এই জনসংযোগ কার্যক্রমের ফলে দলের নেতাকর্মীদের তরুণ অংশটির মাঝে তারেক রহমান শুধু মাত্র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের পরিচিত থেকে বেরিয়ে এসে দলের একজন দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

২০০৫ সালে তিনি দেশব্যাপী তৃণমূল সম্মেলনের আয়োজন করেন এবং প্রতিটি উপজেলা ইউনিটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসব সম্মেলনে তিনি কৃষকদের জন্য সরকারি ভর্তুকি, বয়স্কদের জন্য ভাতা, পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন ব্যাগ বিরোধী উদ্যোগ এবং নারী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি কর্মসূচি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন। এসব উদ্যোগ স্কুলে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এ সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে নিবন্ধন করা অন্তত ১৮ হাজার মানুষের চিঠির জবাব দেন।

২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সামরিক শাসন জারি হলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সে সময় দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরকে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিতে বাধ্য করা হয়। একই সময়ে বেগম খালেদা জিয়াকে দেশত্যাগে বাধ্য করার কৌশলের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে হয়।

তিনি ২০০৯ সালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং দল পুনর্গঠনের কাজে সক্রিয় হন। ২০১৮ সালে তার মা, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি হলে তাকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে তিনি শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

১৯৯৪ সালে ব্যক্তিগত জীবনে তারেক রহমান সাবেক নৌবাহিনী প্রধান ও দুইবারের মন্ত্রী প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের কন্যা ডা. জোবায়দা রহমানকে বিয়ে করেন। ডা. জোবায়দা রহমান একজন কার্ডিওলজিস্ট এবং তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তাদের একমাত্র কন্যা জাইমা রহমান।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ








সংবাদ ছবি
গাজীপুর-৩ আসনে ডা. বাচ্চুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ
২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৫০:০৪


সংবাদ ছবি
রামপালে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা
২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৪২:১৮


Follow Us