কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মোথাজুরী এলাকায় ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। পারিবারিক কবরস্থান থেকে নিজের মায়ের মরদেহ তুলে এনে ঘরে মশারী টানিয়ে লেপকাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। ছেলেটির নাম সজিব হোসেন এবং সে মাদকাসক্ত। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র আতঙ্ক ও কৌতূহল।

২৪ নভেম্বর সোমবার সকালে কবরস্থানে গিয়ে কবর খোলা দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সজিব ঘর বন্ধ করে রেখেছে, আচরণেও অস্বাভাবিকতা দেখা যাচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সজিবের ঘরের তালা ভাঙা হয়। ঘরের ভেতর মশারীর নিচে লেপকাঁথায় মোড়া অবস্থায় পাওয়া যায় খোদেজা বেগমের মরদেহ। সেখান থেকে তখন প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বামী আনতাজ আলীর মৃত্যুর পর মোথাজুরী এলাকার খোদেজা বেগম একমাত্র ছেলে সজিবকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। বাবা না থাকার সুযোগে সজিব ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং প্রায়ই মায়ের সাথে ঝগড়াবিবাদ ও শারীরিক নির্যাতন করত।
গত ২২ নভেম্বর শনিবার দুপুরে মা–ছেলের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে অভিমান ও মানসিক যন্ত্রণায় খোদেজা বেগম গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কিন্তু রাতের কোনো একসময় সজিব গোপনে কবর খুঁড়ে মরদেহ তুলে নিজ ঘরে নিয়ে আসে। সেখানে মশারী টানিয়ে লেপ–কাঁথা দিয়ে মরদেহ ঢেকে রাখে। এ ঘটনা জানাজানি হলে আশপাশের বহু মানুষ ভিড় করে মরদেহ দেখতে।
খোদেজার বড় ভাই আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, সজিব আমাকে ফোন করে বলেছে মাকে কেন মাটি দিলেন। সে আমাকে খুন করার হুমকিও দিয়েছে। আমাদের পরিবার বর্তমানে চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি।
কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুরুজ জামান বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও মর্মান্তিক। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় মরদেহটি পুনরায় দাফন করা হয়েছে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available