• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ১১:০১:০০ (10-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১ সকাল ১১:০১:০০ (10-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

২১ আগস্টের হামলায় আহত কচুয়ার কৃষ্ণ পাটিকরের শরীরের দাগ আজও মুছেনি

২১ আগস্ট ২০২৩ সকাল ১০:২৭:২৩

২১ আগস্টের হামলায় আহত কচুয়ার কৃষ্ণ পাটিকরের শরীরের দাগ আজও মুছেনি

কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় আহত কৃষ্ণার শরীরে স্প্রিন্টার বিদ্ধ হওয়ার দাগ আজও মুছেনি। একান্ত সাক্ষাৎকারে সে কথাই জানিয়েছেন তিনি।

কচুয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের পাটিকর বাড়ির কৃষ্ণ পাটিকর (৬১) বলেন, ওই সময় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে কচুয়া থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব প্রাণজল, দেবীপুর গ্রামের মিজান এবং আমাদের গ্রামের গাজী কামালের বাবা আব্দুল গফুরসহ আমরা চারজন ওই সমাবেশে যোগ দেই। সমাবেশে ট্রাকের ওপর স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চের খুব কাছেই ছিলাম আমরা। আমাদের নেতা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্যারকে মঞ্চে উঠিয়ে দিয়ে একটু সরে আসি। এর ফাঁকে প্রাণজল বলে ‘আমি একটু পানি খেয়ে আসি’ তারপর আর তাকে খুঁজে পাইনি। নেত্রীর বক্তব্য শুরু হওয়ার পর মনোযোগ সহকারে শুনছিলাম। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হঠাৎ বিকট একটা আওয়াজ শুনলাম। আওয়াজের সাথে সাথে দেখলাম আমাদের নেতাকর্মীরা মাটিতে ঢলে পড়ছে। তখন আমি মনে করলাম তারা ভয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ছে। কিছুক্ষণ পর মনে হলো, আমার শরীরে গরম লাগছে। আমার শরীরে হাত দেই, তারপর চোখে সামনে এনে দেখি তাজা রক্ত।

জীবন বাঁচানোর তাগিদে তখন আমিও সবার মতো ছোটাছুটি শুরু করলাম। তখন দেখি আমাদের নেতা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্যার ঘোরপাক খাচ্ছেন। মনে হচ্ছে, কোন দিক দিয়ে বের হবেন সে পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। তখন নিজের চিন্তা না করে স্যারকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে গেলাম। পরক্ষণেই দেখলাম একটি ভ্যান গাড়ি পাশ দিয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথেই আমি ভ্যান গাড়িটি থাবা দিয়ে ধরে ড্রাইভারকে বললাম আমার নেতাকে বাঁচাও, তখন ভ্যান ড্রাইভারসহ আমার নেতাকে ভ্যান গাড়িতে তুলে দিয়ে পান্থপথের দিকে পাঠিয়ে দেই। তখন আহত অবস্থায় আমি কাতরাতে কাতরাতে সামনে এগুলাম। দেখলাম, আমাদের নেত্রীর গাড়িটি পির ইয়ামিনি মাকের্টের কাছাকাছি। নেত্রী গাড়িতে উঠার সাথে সাথে অপরদিক থেকে নেত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করতে শুরু করে। ওইখানে আরও কয়েকজন নেতাকর্মী নেত্রীকে ঘিরে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

এক সময় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে, তখন জীবন বাঁচাতে ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থিত আমাদের পার্শ্ববর্তী গ্রামের মক্কা ট্র্যাভেলসের মালিক জামালের স্মরনাপন্ন হই। ট্রাভেলসের দরজার সামনে গিয়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরার পর দেখলাম, জামালের পার্টনার রক্তাক্ত কাপড় পরিবর্তন করে তোয়ালে দিয়ে আমাকে মুড়িয়ে রেখেছেন। পরে জামাল এবং জামালের পার্টনার আমাকে মনোয়ারা হসপিটালে নিয়ে যায়। ওইখানে গিয়ে দেখি, প্রাণজল ওই হসপিটালে। প্রাণজল আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। ওই সময় হসপিটালে অনেক রোগী। কারো হাত নেই, কারো পা নেই। পরে প্রাণজল ডাক্তারদের ডেকে এনে আমার পায়ের এবং মাঝার থেকে স্প্রিন্টার বের করে।

প্রাণজল যদি ওই সময় আমার চিকিৎসার দায়িত্ব না নিত তাহলে আমি মনে হয় বেঁচে ফিরতে পারতাম না। পরে প্রাণজল তার বাসায় আমাকে নিয়ে যায়। সকালে একটু সুস্থ হলে আমি তাকে বলি, আমি বাড়িতে চলে যাবো। পরে সে আমাকে সায়েদাবাদ এনে কচুয়ার বাসে তুলে দেয়। বাড়িতে এলে আমার পরিবার, এলাকাবাসী ও আত্মীয়-স্বজন আমাকে দেখে কান্নাকাটি শুরু করে। পরিবারের লোকজন আমাকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। যদিও সেই সময়ে আমি সুস্থ হই কিন্তু দীর্ঘ বছর ধরে এ যন্ত্রণা সঙ্গে নিয়ে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে জীবন কাটছে আমার। শরীরে বিদ্ধ হওয়া সেই স্প্রিন্টারের দাগ আজও মুছে যায়নি।

দীর্ঘ ১৯ বছর পার হলেও ২১ আগস্টে যারা এই বর্বরোচিত হামলায় নিহত এবং আহত হয়েছেন, তাদের এবং পরিবারের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট তিনি আবেদন জানান।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব প্রাণজল বলেন, ওই সমাবেশে আমরা চারজন কচুয়া থেকে যোগ দেই। গ্রেনেড হামলার ঠিক আগ মুহুর্তেই আমি কৃষ্ণকে বলে পানি আনতে যাই। তার কিছুক্ষণ পরেই বিকট শব্দের আওয়াজ শুনতে পাই। দলীয় নেতাকর্মীরা এইদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করছে। এখন মনে হয়, পানি আনতে যাওয়ার কারণে আমি প্রাণে বেঁচে গেছি। জীবনের সন্ধিক্ষণে এসে কৃষ্ণ পাটিকর চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, চিকিৎসার অভাবে কৃষ্ণ পাটিকরের যেন মৃত্যু না হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ বলেন,  কৃষ্ণ পৌরসভার পাটিকর পাড়ার আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী কর্মী। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় সে আহত হয়। পরে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে বর্তমানে তার পরিবার নিয়ে চলাচল এবং চিকিৎসা খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, অসহায় ও আহত কর্মীদের যেন প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়।  
 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ










আজ নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ
১০ মে ২০২৪ সকাল ০৮:১৪:১০