• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০২:৩৪:২০ (08-May-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বুধবার ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ দুপুর ০২:৩৪:২০ (08-May-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

আমি হত্যা করিনি, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মামুনের হাতে তুলে দিয়েছিলাম: স্ত্রীর স্বীকারোক্তি

২৭ এপ্রিল ২০২৪ সকাল ০৭:৪৯:১১

আমি হত্যা করিনি, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মামুনের হাতে তুলে দিয়েছিলাম: স্ত্রীর স্বীকারোক্তি

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি: পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে বেশ কয়েকবার পালিয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রী। এরপরেও সন্তানদের কথা ভেবে ওই স্ত্রীকেই বারবার ফিরিয়ে এনেছিলেন স্বামী মোহাম্মদ আলী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবন দিয়ে এর খেসারত দিতে হলো স্বামী মোহাম্মদ আলীকে। স্ত্রী মুন্নি বেগম আর তার পরকীয়া প্রেমিক মামুন চৌকিদার মিলে খুন করল তাকে।

পরিকল্পনা করে স্বামীকে ভাতের সঙ্গে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে রাতের আঁধারে পরকীয়া প্রেমিক মামুন চৌকিদারের কাছে তুলে দেয় স্ত্রী মুন্নি বেগম। এরপর একটি পুকুর থেকে স্বামী মোহাম্মদ আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

২৬ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের রাড়ী কান্দি এলাকায় স্বামীর বাড়িতে বসে এভাবেই মোহাম্মদ আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করছিলেন স্ত্রী মুন্নি বেগম।

এর আগে ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া মাদবরের পুকুর থেকে মোহাম্মদ আলী মাদবরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত মোহাম্মদ আলী মাদবর (৪০) শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিন মাদবরের ছেলে। পেশায় তিনি একজন সিএনজি চালক ছিলেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৯ বছর আগে মোহাম্মদ আলী মাদবরের সঙ্গে বিয়ে হয় মুন্নি বেগমের। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মুন্নি বেগম প্রায়ই তার পরকীয়া প্রেমিক মামুন চৌকিদারের সঙ্গে পালিয়ে চলে যেত। কিছুদিন আগেও মুন্নি বেগম মামুনের সঙ্গে পালিয়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু ছোট সন্তানদের কথা ভেবে মোহাম্মদ আলী মাদবর তার স্ত্রী মুন্নিকে আবার ফিরিয়ে আনেন। এরপরও পরকীয়া প্রেমিক মামুন চৌকিদার বিভিন্নভাবে মুন্নি বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করত। গত ২৪ এপ্রিল বুধবার রাতে মোহাম্মদ আলী মাদবর নিখোঁজ হন, পরদিন পুলিশ তার মরদেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদ আলীর স্বজনরা জানতে পারেন মোহাম্মদ আলী ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল। এরপর বাড়িতে এসে মুন্নি বেগমের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে ভাতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে পরকীয়া প্রেমিক মামুন ও তার সঙ্গীদের কাছে তুলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন মুন্নি বেগম। এরপর মুন্নি বেগমকে আটক করে থানা পুলিশ খবর দেয় এলাকাবাসী।

নিহত মোহাম্মদ আলী মাদবরের স্ত্রী মুন্নি বেগমের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মামুনের সাথে চলে গিয়েছিলাম। এরপর ঝামেলা করে আমাকে আবারও এনেছিল মোহাম্মদ আলী। এই বাড়িতে আসার পরেও মামুনের সঙ্গে আমার মোবাইলে যোগাযোগ হয়েছিল। মামুন আমাকে বলেছিল, মোহাম্মদ আলী আমার (মামুনের) নামে মামলা করেছে। মামলা যদি চলমান থাকে তাহলে মোহাম্মদ আলীর ক্ষতি করব। কিন্তু আমি তাকে বলেছিলাম, মোহাম্মদ আলী মামলা তুলে ফেলবে, ক্ষতি করার দরকার নেই। কিন্তু সে আমার কথা শোনেনি বরং আমাকে ভয় দেখিয়ে বলেছে, আজ ঘুমের ওষুধ দিয়ে যাব, এই ওষুধ মোহাম্মদ আলীকে খাওয়াতে হবে। নয়তো তোমার মেয়েদের মেরে ফেলব। মামুনের এমন কথায় আমি মোহাম্মদ আলীকে ভাতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছি। এরপর মামুনকে ফোন দিলে এসে মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে গেছে। মামুন যখন মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে যায়, তখন ওর সঙ্গে আরো দুই-তিনজন ছেলে ছিল। কিন্তু আমি তাদের চিনি না। যখন মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন মোহাম্মদ আলী অজ্ঞান ছিল।‘

নিহতের ভাতিজা আসিফ মাদবর বলেন, 'কাকি দুই-তিন বার চলে গিয়েছিল। কাকায় শিশু মেয়েদের দিকে তাকিয়ে বারবার ফিরিয়ে এনেছেb। কিন্তু কাকি ভালো হয়নি। গত বুধবার রাতে প্রথমে কাকার কাছ থেকে সব টাকা পয়সা নিয়ে নেয় কাকি। এরপর কাকাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরকীয়া প্রেমিক মামুনের কাছে তুলে দেয়। মামুন আমার কাকাকে মেরে ফেলছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

নিহতের বড় বোন আয়েশা বেগম বলেন, ’বারবার চলে যাওয়ার সত্ত্বেও আমার ভাই তার দুইটি ছোট্ট মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আবারও মুন্নিকে এনেছিল। কিন্তু বুধবার রাতে ভাতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরকীয়া প্রেমিককে দিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে মুন্নি। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই।’

বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, ’নিহত মোহাম্মদ আলীর পরিবারে দাম্পত্য কলহ ছিল। বিষয়টি নিয়ে থানায় বেশ কয়েক বার অভিযোগ করা হয়েছিল। মোহাম্মদ আলীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল স্বজনরা। বিষয়টি থানা পুলিশ টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে।’

মুন্নি বেগম ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে পরকীয়া প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়েছেন, ’এমন একটি ভিডিও এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে বিষয়টি আসলে কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যদি নিহতের স্ত্রী স্বীকার করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুরো বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ