আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়কেই একে অপরের কাছে কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। খবর রয়টার্সের।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী শুক্রবার আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকে রাশিয়া সমঝোতায় রাজি কিনা, তা সঙ্গে সঙ্গেই বোঝা যাবে।
পুতিনের সঙ্গে এই শীর্ষ বৈঠকের আগে ইউরোপীয় নেতারা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন। ইউরোপে শঙ্কা, ওয়াশিংটন হয়তো কিয়েভের জন্য প্রতিকূল শর্ত চাপিয়ে দিয়ে শান্তি চুক্তি করতে পারে।
ইতোমধ্যে যুদ্ধের প্রতি অবস্থান আরও কঠোর করে ইউক্রেনে অতিরিক্ত মার্কিন অস্ত্র সরবরাহে সম্মতি দিয়েছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি রুশ তেল ক্রেতাদের ওপর শুল্ক আরোপেরও হুমকি দিয়েছেন। তবে ইউরোপীয় মহলে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, তিনি হয়তো এমন সমঝোতায় যেতে পারেন, যাতে কিয়েভকে বড় ছাড় দিতে হবে।
ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস সোমবার বলেন, “যুদ্ধ শেষ করতে এবং ইউরোপে ভবিষ্যতে রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ট্রান্সআটলান্টিক ঐক্য, ইউক্রেনকে সমর্থন এবং রাশিয়ার ওপর চাপ বজায় রাখা জরুরি।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সোমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির সঙ্গে আলাপে ইউক্রেনে শান্তি আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, তারা একমত হয়েছেন যে শান্তি অবশ্যই ইউক্রেনকে সঙ্গে নিয়েই গড়ে তুলতে হবে, চাপিয়ে দেয়া নয়।
তবে হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “এটি মূলত পরিস্থিতি বোঝার বৈঠক। প্রথম দুই মিনিটেই আমি বুঝে যাবো অগ্রগতি সম্ভব কিনা। আমি তাকে বলব, তোমাকে এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে। যদি দেখি এটা মীমাংসার পথে যাচ্ছে না, তবে আমি বলব গুড লাক এবং সেখানেই শেষ হবে।”
ট্রাম্প জানান, ভবিষ্যতে জেলেনস্কিকে নিয়ে যৌথ বৈঠক হতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা। তিনি শিগগিরই ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন। যদিও অতীতে ভূখণ্ড বিনিময়ের প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া বা ইউক্রেন, কেউই এ বিষয়ে রাজি হয়নি।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখল করে আছে, অন্যদিকে ইউক্রেনের দখলে রাশিয়ার কোনো ভূখণ্ড নেই বললেই চলে। ট্রাম্প বলেন, ভূখণ্ড ছাড় দেয়ার বিষয়ে জেলেনস্কির অবস্থান তাকে সামান্য বিচলিত করেছে এবং তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভূখণ্ড বিনিময় ঘটবেই।
ট্রাম্প বলেন, আমি রাশিয়ার মাধ্যমে এবং সবার সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, ইউক্রেনের ভালোর জন্যই এটি হবে। কিছু ভূখণ্ড বিনিময় হবে। রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রয়েছে, আমরা চেষ্টা করব সেগুলোর কিছু ফেরত পেতে।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক জানান, তিনি সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে কথা বলেছেন। এক্সে দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, স্থায়ী শান্তির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি’ অপরিহার্য।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available