সরকারি অর্থে চোখের চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর গেলেন নাটোরের মিঠু
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের হাটগোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক ও জুলেখা খাতুন দম্পতির ছেলে আব্দুল্লাহ আল বাকী মিঠু। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার কেজির মোড় এলাকা থেকে চোখ, মুখ ও কপালে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। বেশ কয়েক দফা চিকিৎসা নিয়েও বাম চোখে দেখতে পান না ৩২ বছর বয়সী মিঠু।দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় চাকরি হারিয়ে অভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার চিকিৎসা। হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে মিঠুর কাছে এলো একখানা পত্র। পত্রটি পেয়ে তিনিসহ তার পরিবারের সকলের চোখে পানি চলে আসে। পত্রটি ছিলো বাংলাদেশ সরকার পক্ষ থেকে। যেখানে লেখা ছিলো সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল আই হসপিটালে মিঠুর চোখের চিকিৎসা করা হবে। আর এর সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করবে সরকার।ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে গত ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন আব্দুল্লাহ আল বাকী মিঠু।মিঠু জানান, গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে চোখ-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। এতে তিনি বাম চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন। জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে তার চোখে দুই দফা অস্ত্রোপচার করা হলেও কোনো লাভ হয়নি। শরীরের বিভিন্ন অংশের বুলেট বের করা গেলেও আটটি বুলেট শরীরের বিভিন্ন অংশে এখনো রয়ে গেছে।তিনি আরও জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সেদিন মৃত ভেবে মরদেহের সঙ্গে ফেলে রাখা হয় তাকে। পরে চেতনা ফিরলে চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা দেন। ২০১৫ সালে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি থেকে মেডিকেল রেডিওলজি বিভাগে পাস করেন তিনি। এক বছর ধরে সিরাজগঞ্জের বেতিন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ড্যাফোডিল ইন স্পেশালিস্ট হাসপাতালে চাকরি করতেন। দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থ থাকায় তিনি চাকরি হারিয়েছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে সরকার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মিঠুর চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে।এদিকে মিঠুর উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মাশরাফী বিন মোস্তফা সাফাত।