• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ১লা কার্তিক ১৪৩২ সন্ধ্যা ০৬:১৮:৪০ (16-Oct-2025)
  • - ৩৩° সে:

নওগাঁর জেল খাটা এরশাদ এখন শিশু চিকিৎসক!

১৬ অক্টোবর ২০২৫ সকাল ১১:১৯:১০

সংবাদ ছবি

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় একসময় অবৈধ কারখানায় ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির দায়ে জেল খাটা এরশাদ আলী (৫৫) এবার শিশু চিকিৎসক সেজে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পল্লী ডাক্তার সেজে তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার আহসানগঞ্জ এলাকায় মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। অথচ তার নেই কোনো বৈধ চিকিৎসার ডিগ্রি বা সনদ। এমনকি তিনি কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকও নন।

Ad
Ad

স্থানীয়দের অভিযোগ, এরশাদ আলীর ভুল চিকিৎসায় শিশুরা মারাত্মক শারীরিক জটিলতায় পড়ছে, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।

Ad

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাত্র ৯০০ মিটার দূরে আহসানগঞ্জ সরকারি হাই স্কুল মার্কেটে অবস্থিত মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ভিড় করেন। সপ্তাহে মাত্র একদিন এখানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বিধান কুমার শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বাকি ছয়দিন ফার্মেসির মালিক এরশাদ আলী নিজেই চিকিৎসকের ভূমিকায় শিশুদের নানা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এরশাদ আলী পার্শ্ববর্তী রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের গাদু শেখের ছেলে। অতীতে তিনি ঢাকার চানখারপুল এলাকায় অবৈধ ওষুধ কারখানা স্থাপন করে ভেজাল ওষুধ তৈরি করতেন এবং তা বিভিন্ন ফার্মেসিতে সরবরাহ করতেন। সেসময় একটি গোপন অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত তার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ জব্দ করে এবং তাকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতের রায়ে তাকে কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।

উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের হযরত আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার ১৩ মাস বয়সী কন্যাশিশু শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। লোকমুখে শুনে এরশাদ আলীর কাছে নিয়ে গেলে তিনি একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকসহ সাতটি ওষুধ দেন। পরে জানতে পারি তিনি কোনো বৈধ চিকিৎসক নন।

জাতআমরুল গ্রামের আরিফুল ইসলাম জানান, তার মেয়ের জন্য চিকিৎসক যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে গেলে এরশাদ আলী তা পরিবর্তন করে ইনজেকশন দেন। ইনজেকশনটি ভুলভাবে প্রয়োগ করায় তার মেয়ের হাত ফুলে যায় এবং পরবর্তীতে রাজশাহীতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তিনি আরও বলেন, মেয়ের চিকিৎসা করাতে তাকে জমি বন্ধক রাখতেও হয়েছিলো।

স্থানীয় বাসিন্দা রওনক রাজীব বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং ঔষধ প্রশাসন যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এরশাদের মতো ব্যক্তিরা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এরশাদ আলী দাবি করেন, ‘আমি ফার্মাসিস্ট কোর্স সম্পন্ন করেছি, ফলে আমি চিকিৎসা দিতে পারি। সরকারের পক্ষ থেকে আমার ড্রাগ লাইসেন্সও রয়েছে। আমি কিছু দিন জেলে ছিলাম। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। আর আপনাদের কোন সনদ দেখাতে বাধ্য নই।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁর  সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ





সংবাদ ছবি
দিনাজপুর বোর্ডে ৪৩ কলেজে কেউই পাস করেনি
১৬ অক্টোবর ২০২৫ বিকাল ০৫:৪৪:০১







Follow Us