কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের তালুকদার পাড়া মহল্লায় এক শিক্ষক দম্পতির বাড়িতে সংঘটিত ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
১০ আগস্ট রোববার রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে একদল সশস্ত্র ডাকাত জানালার গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রায় দেড় লাখ টাকা এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কালাই থানার পুলিশ ও জয়পুরহাটের সার্কেল এএসপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গৃহকর্তা নাফসি তালুকদার কালাই ময়েনউদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আর তার স্ত্রী তাজমিনা তালুকদার ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। রাতে তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। সাড়ে তিনটার দিকে আট জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল বাড়ির পেছনের জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে নিচতলার ঘরে প্রবেশ করে পরে দ্বিতীয়তলায় উঠে যায়। সেখানেই গৃহকর্তা নাফসি তালুকদার, তার স্ত্রী তাজমিনা ও সন্তানদের হাত-পা এবং চোখ বেঁধে ফেলে। এরপর শুরু হয় নির্মম মারপিট ও ভয় দেখিয়ে ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করার কাজ।
ঘরের আলমারিসহ প্রতিটি আসবাব তল্লাশি চালিয়ে তারা এক লাখ বিশ হাজার টাকা, চারটি মোবাইল ফোন এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ডাকাতরা বাড়িতে লুটপাট চালায়।
শিক্ষিকা তাজমিনা তালুকদার বলেন, রাতের অন্ধকারে হঠাৎ আট জনের মুখোশধারী একদল ডাকাত ঘরে ঢুকে পড়ে। তারা আমাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করে হাত, পা, মুখ বেঁধে ফেলে। ঘরের প্রতিটি জিনিসপত্র তছনছ করে তারা টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার খুঁজে নেয়।
শিক্ষক নাফসি তালুকদার জানান, ডাকাতরা আট জন ছিল। তাদের হাতে চাপাতি, রডসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। তারা চোখ বেঁধে আমাদের একটি ঘরে আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা ও ১৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চলে যায়। কিছু বলার সুযোগই পাইনি। তারা চাপাতি ও লোহার রড দিয়ে ভয় দেখিয়ে বলে, চিৎকার করলে মেরে ফেলবে। ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ছিল এটি।
ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার পর গৃহবাসীরা চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাদের হাত-পা ও চোখের বাঁধন খুলে দেন।
শিক্ষকের বড় ভাই সোহেল তালুকদার বলেন, রাতে চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি সবাই বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। ঘরের সবকিছু তছনছ করা। আমার বয়স ৫০ বছর ছাড়িয়ে গেছে, এই মহল্লায় কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। এটা হয়তো কারও পূর্বশত্রুতা বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন রোববার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত চালিয়েছে। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available