পূর্বধলায় ভুল চিকিৎসায় নারী খামারির ৮টি ছাগলের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা: নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলায় এক নারী খামারির আটটি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ছয়টি গর্ভবতী ও দুটি ছোট খাসি ছাগল রয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর সোমবার রাতে খলিশাউড় পূর্বপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে শরিফা আক্তারের খামারে এ ছাগলগুলি মারা যায়।খামারির অভিযোগ, উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনের ভুল চিকিৎসার কারণে ছাগলগুলোর মৃত্যু হয়েছে। শরিফা আক্তার জানান, ছয় বছর আগে তাঁর নিজ বাড়িতে একটি ছাগলের খামার গড়ে তোলেন। বর্তমানে ওই খামারে ছোট-বড় ৪৫টি ছাগল রয়েছে। রোববার তিনি পশু পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার সম্পর্কে জানার জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যান। সেখানে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন সারা তাইফুন্নাহারের কাছে তাঁর ছাগলের খামারের কথা জানিয়ে পরামর্শ চান। পরদিন সোমবার বিকেলে ভেটেরিনারি সার্জন শরিফার খামারের ছাগলগুলো দেখতে যান।শরিফা আক্তার বলেন, ভেটেরিনারি সার্জন ছাগলগুলোকে দেখে ভ্যাকসিন কৃমিনাশক নাইট্রোসিলিন গ্রুপের নাইট্রোনেক্স ইনজেকশন দেয়ার পরামর্শ দেন। তখন আমি জানাই প্রায় তিন সপ্তাহ আগে সব ছাগলগুলোকে কৃমিনাশক ইনজেকশন দেয়া হয়েছে। এখন দিলে কোন সমস্যা হবে কি-না? তাঁর কথা মতো ভ্যাকসিন দিতে রাজি হলে তিনি ভ্যাকসিনের একটি প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। ওই ইনজেকশন দেয়ার পরপরই আমার ছাগলগুলো অসুস্থ হয়ে মারা যায়।শরিফা আক্তারের বাবা মিজানুর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, সোমবার রাত আটটার দিকে স্থানীয় একটি ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন এনে ছাগলকে সেই ভ্যাকসিন পুশ করার আধ ঘণ্টার মধ্যেই খামারের অনেকগুলো ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরমধ্যে খিঁচুনি ও লাফালাফি করে ছয়টি গর্ভবতী ও দুইটি বাচ্চা খাসি ছাগল মারা যায়। এখনও সাতটি ছাগল অসুস্থ রয়েছে। এতে ৫৫ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। তিনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ‘ভুল’ চিকিৎসার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন সারা তাইফুন্নাহারে বলেন, আমার ভুল চিকিৎসায় ছাগল মারা গেছে এমন অভিযোগ সঠিক নয়। তারপরও বিষয়টি দেখতে হবে কেন এমন হলো। ভ্যাকসিনের মেয়াদ ঠিক ছিল কিনা এবং কী কারণে এমন হয়েছে তা উদ্ঘাটন না করে বলা সম্ভব নয়।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এমএমএ আউয়াল তালুকদার বলেন, ছাগল মারা যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। খামারটি আমার হাতেই গড়া। খামারি একজন উচ্চ শিক্ষিত প্রশিক্ষিত নারী। ভ্যাকসিন খামারি নিজেই পুশ করেছেন। আর ভ্যাকসিন সাধারণত চামড়া নিচে দিতে হয়। তাছাড়া ওভার ডোজ হলো কিনা। ছাগলগুলি কি কারণে মারা গেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ছাড়া অসুস্থ হয়ে যাওয়া অন্য ছাগলগুলোকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। সেগুলি এখন মুখে খাবার খাচ্ছে।