মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: দেশের তৃতীয় বৃহত্তর বন মধুপুর শালবন। এ গড় অঞ্চলের মাটি লাল রঙের। নিচু বাইদ অংশে সেচ সুবিধার কারণে অনায়াসে ধান চাষ হয়। আর উঁচু অংশে মাটির উর্বরতা শক্তি বেশি থাকার কারণে সোনা ফলছে। আনারস চাষের সাথে প্রায় দুই থেকে ছয় সাত ধরনের ফসল চাষ হচ্ছে।
কৃষকরা মনে করছেন, গড় অঞ্চলের মাটির অধিক উর্বরতা শক্তি বেশি। তাছাড়া, গড় অঞ্চলের মাটি উঁচু থাকার কারণে বন্যা মুক্ত। তবে কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা দেখা দিলেও নালা-ড্রেন কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা যায় সহজেই। ফলে ফসল নষ্টের শংকা অনেকটাই কমে যায়।
এখানকার আনারস খুবই জনপ্রিয়। এর সাথে একই জমিতে কৃষকরা চাষ করেন আদা, হলুদ,কলা,পেঁপে, কচু, মুখিকচু, মরিচসহ বাহারি বৈচিত্র্যের কৃষি ফসল।
ভুটিয়া, টেলকি, গায়ড়া, সাইনামারি, গোবুদিয়া, মাগন্তিনগর, জাঙ্গালিয়া, বেরিবাইদ, গেচুয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, আনারসের সাথে সাথী ফসলের সবুজ বৈচিত্র্য। আনারসের বাগানে কচু, আদা, হলুদ, পেঁপে, মরিচ, কলাসহ নানা ফসল চাষ হচ্ছে। সাথী ফসলগুলো সবুজে আচ্ছাদিত। আবার অনেক স্থানে দেখা যায়, পেঁপের সাথেও অন্যান্য ফসলের চাখ করা হয়েছে। ড্রাগন বাগানেও রয়েছে সাথী ফসল।
গড় অঞ্চলের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাথী ফসল চাষের মজার গল্প। তাদের এলাকায় বনের সামাজিক বনায়নের প্লট ছাড়াও নিজেদের জমিতে বেশির ভাগই আনারস চাষ হয়ে থাকে। আনারসের ফলন আসে আঠার মাসে। এর মধ্যে আনারসের এ জমি অলস থাকে। এজন্য তারা বাগানের মাঝে মাঝে কিছু কলা রোপণ করেন। কলা বিক্রির টাকায় কিছুটা খরচ উঠে আসে। মাঝে মাঝে কচু, আদা, হলুদ, পেঁপে চাষ করেন। এ ফসলগুলোর কোনোটা ছয় মাস, আবার কোনোটা এক বছরে ছয়মাসের মধ্যে ফলন আসে।
গাছাবাড়ি গ্রামের আব্দুল হক( ৫০) জানান, তিনি এবছর ৩২ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করেছেন। সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছে। পেঁপে পরিপক্ব হয়ে গেছে। শুধু পেঁপেই বিক্রি করেছেন প্রায় কোটি টাকার। সামনে বছর আনারস বিক্রি করবেন।
মাগন্তিনগর গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান (৪৮)জানান, তিনি ১৫ বিঘা জমিতে এক সাথে একই জমিতে আনারসের সাথে কচু, কলা চাষ করেছেন। সাথী ফসলে পাবেন বাড়তি লাভ। আদা-হলুদে সংসারের চাহিদা মিটে যায়। কিনতে হয় না।
দোখলা রেঞ্জের সিএমসির সভাপতি মোতালেব হোসেন বলেন, মধুপুরের উঁচু এলাকাগুলোতে অনেক দিন যাবত মিশ্র ফসল চাষ হচ্ছে। আনারসের সাথে আদা, হলুদ, পেঁপে, কচুসহ বিভিন্ন মিশ্র ফসল চাষ করা হয়ে থাকে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, মধুপুরে ভূপ্রকৃতি কৃষি ফসলের জন্য বিশেষ উপযোগী। গড় অঞ্চলের লাল মাটি বন্যা মুক্ত। এখানে মিশ্র চাষে কৃষকরা সফলতা পাচ্ছেন। আনারসসহ বিভিন্ন ফসলের বাগানে মিশ্র ফসল হিসেবে আদা, কচু, হলুদ, কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন সাথী ফসল হিসেবে চাষাবাদ হয়ে থাকে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available