• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৫ই কার্তিক ১৪৩২ বিকাল ০৫:০৪:২৬ (20-Oct-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

শিগগিরই একক প্রার্থী চূড়ান্ত, বিশৃঙ্খলা করলেই সর্বোচ্চ শাস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি, আপাতত সবাই আশাবাদী। সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের কোনো মনোনয়ন প্রত্যাশীকেই নিরাশ করেননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বরং সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় দলকে সংগঠিত করে, ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।১৯ অক্টোবর রোববার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে পৃথক বৈঠকে বসেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে তিনি সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে বিএনপিকে শক্তিশালী করা, মাঠে সক্রিয় থাকা ও ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দেন।একইসঙ্গে সতর্ক করে দেন, প্রচারণা বা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে যেন কেউ অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে না জড়ান কিংবা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করেন। তিনি জানান, একজনকেই প্রার্থী করা হবে। সবাইকে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে দলীয় সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিলেট বিভাগের চার জেলার মোট ১৯টি আসনের ১২৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী উপস্থিত ছিলেন। তবে সবারই ডাক পড়েনি। যারা আনুষ্ঠানিকভাবে ডাক না পেয়েও ঢাকায় গিয়েছেন, তাদের সঙ্গেও পরবর্তীতে আলাদা বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল।বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব জানান, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় প্রতিটি আসনে ত্যাগী, যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাকেই চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে।তিনি বলেন, মনোনয়ন ঘোষণার পর সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে কাজ করতে হবে। একজন প্রার্থী নির্ধারিত হলে বাকিদের দায়িত্ব হবে তাকে বিজয়ী করা।বৈঠকে প্রতিটি আসনের সাংগঠনিক অবস্থা, জনপ্রিয়তা, ভোটার সংযোগ ও নির্বাচনী কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে জানান সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।দলীয় সূত্র জানায়, এবারের প্রার্থী বাছাইয়ে বিএনপি তথ্যভিত্তিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। প্রতিটি প্রার্থীর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে একটি ডিজিটাল ডেটাবেজে। সেখানে পাঁচটি যোগ্যতা ও পাঁচটি অযোগ্যতার মানদণ্ডে প্রার্থীর জন্য স্বয়ংক্রিয় র‌্যাংকিং তৈরি হয়, যা মনোনয়ন কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ কারণ ছাড়া এই র‌্যাংকিংয়ের বাইরে গিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।যোগ্যতা নির্ধারণে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, জনসম্পৃক্ততা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি, সাংগঠনিক দক্ষতা, পারিবারিক ও রাজনৈতিক ঐতিহ্য এবং দলের প্রতি ত্যাগের মতো বিষয়গুলোকে।বৈঠকে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানান, প্রতিটি আসনে একজনকেই চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে। বিকল্প হিসেবে আরও দুইজনের নাম সংরক্ষণ করা হবে। মনোনীত প্রার্থীর কোনো কারণে সমস্যা দেখা দিলে বিকল্প তালিকার মধ্য থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে যারা এবার মনোনয়ন পাবেন না, তাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সক্রিয় থাকতে বলা হতে পারে।সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বৈঠকে মহাসচিব মূলত দলীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কাউকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, সিলেট বিভাগের নেতাদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা, মাঠ পর্যায়ে শৃঙ্খলা রক্ষা এবং মনোনয়ন পাওয়ার পর ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ওপর কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সিলেটের ১৯ আসনের মধ্যে যেসব নেতারা বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় গেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন— বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, ড. এনামুল হক চৌধুরী, এমএ মালিক, তাহসীনা রুশদীর লুনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আশিক উদ্দিন চৌধুরী, জেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সাবেক সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম, জেলা বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে সাবিনা খান ও সাবেক এমপি মরহুম ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার মেয়ে সৈয়দা আদিবা হোসেন।সুনামগঞ্জ-১ থেকে বৈঠকে যোগ দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুল হক এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল। সুনামগঞ্জ-২ আসনে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী এবং জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেল। সুনামগঞ্জ-৩ আসনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ। সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে অংশ নেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল, জেলা বার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হক। সুনামগঞ্জ-৫ আসনে ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী।হবিগঞ্জ-১ আসনে সাবেক এমপি আলহাজ্ব শেখ সুজাত মিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শিকাগো বিএনপির সভাপতি শাহ মোজাম্মেল হোসেন নান্টু। হবিগঞ্জ-২ আসনে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (কারান্তরীণ) ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, হবিগঞ্জ-৩ আসনে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছ। হবিগঞ্জ-৪ আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মো. ফয়সল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মোছা. শাম্মী আক্তার এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।মৌলভীবাজার-১ আসনে কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজু, মৌলভীবাজার-২ আসনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবেদন রাজা এবং যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমেদ শাহীন। মৌলভীবাজার-৩ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য এম. নাসের রহমান এবং মৌলভীবাজার-৪ আসনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী অংশ নেন।