কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: ‘আমার ছেলেটা বাঁচতে চায়, কিন্তু আমরা তো অসহায়! এত টাকা পাব কোথায়?’ বুকভাঙা কান্নায় এই কথাগুলো বলেন আবদুল্লাহর বাবা হাসান।
জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার পূর্ব কৃষ্টপুর (হরিপুর) গ্রামের ৮ বছর বয়সী শিশু আবদুল্লাহ জন্ম থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত। তার হার্টে রয়েছে দুটি ছিদ্র। এখনই জরুরি অপারেশন না করা গেলে তার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, ছেলেকে বাঁচাতে হলে দ্রুত সার্জারি করানো প্রয়োজন। আর এই চিকিৎসার খরচ প্রায় ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা যা এই দরিদ্র পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।
আব্দুল্লাহর বাবা মো. হাসান একজন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য। তিনি সিরাজগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানিতে স্বল্প বেতনের একটি চাকরি করেন। তার আয়েই চলে স্ত্রী, সন্তান ও মা-বাবার ভরণপোষণ। এই সামান্য আয় দিয়ে একটি বড় ধরনের হার্ট অপারেশনের ব্যয় বহন করা তাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।
ছোট্ট আবদুল্লাহর দিন কাটে দুঃসহ যন্ত্রণায়। খেলাধুলার বয়সে সে পড়ে থাকে বিছানায়। অপুষ্ট শরীর, দুর্বল দেহ আর চোখভরা কান্না যেনো এক অব্যক্ত যন্ত্রণা। অসহায় মা-বাবা কিছুই করতে পারেন না, শুধু চোখের জলে ভাসেন।
আবদুল্লাহর বাবা হাসান জানান, প্রথমে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফয়সাল ফারুখ এবং পরে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সন্তোষ কুমার সাহা তার ছেলেকে পরীক্ষা করেন। তারা নিশ্চিত করেছেন যে, আবদুল্লাহর হার্টে দুটি ছিদ্র রয়েছে এবং অবস্থা দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। জরুরি ভিত্তিতে সার্জারি না করলে শিশুটিকে আর বাঁচানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শিশুটির বাবা আরও জানান, জন্মের পর থেকেই ওর হার্টে সমস্যা। অনেক চিকিৎসা করেছি, যা ছিল সব শেষ। এখন ডাক্তাররা বলছে অপারেশন করতে হবে, নইলে ছেলেটাকে আর বাঁচানো যাবে না। কিন্তু এত টাকা কোথায় পাব? আমি দেশবাসীর কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, কেউ যদি পাশে দাঁড়ান তাহলে আমার ছেলেটা হয়তো বেঁচে যাবে।
প্রতিবেশী শিক্ষক আবু তালেব ও নাহিদ সুলতান বলেন, শিশুটির পরিবার খুবই অসহায়। নিজেরাও যতটুকু সম্ভব সাহায্য করছেন। তবে অপারেশনের খরচ জোগাড় করা এ পরিবারের একার পক্ষে অসম্ভব। তারাও দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেছেন। ছোট্ট এই শিশুটির জীবন বাঁচাতে যেন সবাই একসাথে এগিয়ে আসেন।
কালাই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আজমা বেগম জানান, শিশুটির বাবা-মা ইতোমধ্যে অফিসে যোগাযোগ করেছেন। তিনি তাদের সরকারি অনুদানের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে বলেছেন। তবে এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বাইরে দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন সমাজের সহানুভূতি ও সাহায্য।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available