স্টাফ রিপোর্টার: মানিকগঞ্জে রফিকুল ইসলামের এক কলেজ শিক্ষকের কোটি টাকার একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি সন্ধান মিলেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ।
জানা যায়, একজন সাধারণ শিক্ষক বিগত পতিত ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসর হয়ে অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বণে গেছেন। বর্তমান সময়ে অন্যান্য সাধারণ শিক্ষকদের যখন স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করাই দুষ্কর, তখন তিনি মানিকগঞ্জ শহরের প্রায় ১০ কোটি টাকার আলিশান বিল্ডিং তৈরি করে নাম দিয়েছেন প্রফেসরস বিল্ডিং। এছাড়াও সর্ববৃহৎ গুদামঘর, কয়েক বিঘা জমি রয়েছে তার নামে।
ঘটনাটি শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ এলাকার। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামেরই একজন।
ঘটনা অনুসন্ধান, অভিযোগ পর্যালোচনা ও ব্যাপক খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, শিবালয়ের জাফরগঞ্জ এলাকার মৃত মাজহারুল ইসলামের পুত্র মো. রফিকুল ইসলাম বিশেষ পন্থায় শিক্ষা ক্যাডারে বিসিএস দিয়ে বিগত দিনে রাজবাড়ী মহিলা কলেজে যোগদান করেন। শিক্ষক হিসেবে কিছুদিন যেতে না যেতেই তিনি ফ্যাসিবাদ সরকারের বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা ভবনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্তিতে আসেন। সংযুক্তিতে এসেই তিনি বনে যেতে থাকেন কোটি টাকার মালিক। একের পর এক জমি কিনে বাড়ি, বাগান ও গোডাউন করতে থাকেন। অভিযোগে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের পাশে প্রফেসরস বিল্ডিং এর ৫/ সি ও ৭/ এ দুইটি ফ্ল্যাট তার নামে নিবন্ধিত রয়েছে। যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। ঢাকার মিরপুর-১১ তে একটি ফ্ল্যাট ও গাজীপুরের টঙ্গীতেও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার নামে। জাফরগঞ্জ বাজারে তিন তলা ফাউন্ডেশনের বিল্ডিং, একই বাজারে ৫০ ফুটের লম্বা গোডাউন, ধূসর এলাকায় ৬০ শতাংশ ফলের বাগান এবং ৮ শতাংশ জমির উপর ওয়াল বিল্ডিং বাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎগতিতে তার উত্থান ও বিলাসবহুল চাল চলন এবং দুর্নীতির বিষয়টি জানতে পেরে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তার সংযুক্তি বাতিল করে ধামরাই সরকারি কলেজে বদলি করে দেন।
বর্তমানে তিনি ধামরাই কলেজে কর্মরত আছেন। বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের সময় তার দাপটে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। জুলাই পট পরিবর্তনে তার সকল দুর্নীতি উন্মোচিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার তদন্ত চলছে। এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। জাফরগঞ্জ ও ধূসর এলাকায় শতাধিক গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে তার হঠাৎ ধনী হওয়ার আশ্চর্যজনক গল্প।
এসব বিষয় নিয়ে দুদকের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে এবং কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে সব জানা যাবে এবং আমরা মিডিয়ার সাথে কথা বলব।
একই বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি চাকরি করি। আমার পেনশনের ৪২ লক্ষ টাকা অগ্রিম তুলে আমি এসব সম্পদ করেছি। তাকে সম্পূরক কিছু প্রশ্ন করলে তিনি তার সদুত্তর দেননি।
এসব বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. খবিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, আমরা যে কোনো ধরনের দুর্নীতিকে নিরুৎসাহিত করি এবং সেই লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাই। একইসাথে দুর্নীতিবাজের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available